বেতন নেই তিন মাস ধরে

rongpur
rongpur

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার মেনানগর নুরুল হুদা দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষক-কর্মচারীরা তিন মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। এতে তাঁরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পরিচালনা কমিটি না থাকার কারণে তাঁরা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তারাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে আট কিলোমিটার দূরে মেনানগর গ্রামে ১৯৭৩ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি এমপিওভুক্ত। মাদ্রাসাটিতে ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ১০ জন। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫৩ জন।

শিক্ষকেরা জানান, ওই মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির মেয়াদ ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর শেষ হয়। এরপর বিভিন্ন সময় তিনটি অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হলেও মাদ্রাসার সুপার নিয়মিত পরিচালনা কমিটি গঠনের কোনো উদ্যোগ নেননি। সর্বশেষ গঠন করা অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। কিন্তু মাদ্রাসার সুপার নিয়মিত কমিটি গঠন না করে আবারও ১৭ সেপ্টেম্বর পুনরায় চার সদস্যবিশিষ্ট অ্যাডহক কমিটি গঠন করে অনুমোদনের জন্য মাদ্রাসা বোর্ডে দাখিল করে ১ অক্টোবর অবসরে যান। কিন্তু ওই কমিটির বিরুদ্ধে মেনানগর গ্রামের শহিদুল ইসলাম, নুরুজ্জামানসহ তিনজন মাদ্রাসা বোর্ডে অভিযোগ করেন। এ কারণে ওই কমিটির অনুমোদন হয়নি। কমিটি না থাকায় সেপ্টেম্বর থেকে ৩ মাসের বেতন পায়নি শিক্ষক-কর্মচারীরা।

মেনানগর গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, অভিভাবকেরা নিয়মিত কমিটি গঠনের দাবি করলেও সুপার তা না মেনে বারবার অ্যাডহক কমিটি গঠন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করছেন। এ কারণে নিয়মিত কমিটি গঠনের জন্য ওই অভিযোগ করা হয়েছে।

শিক্ষক আয়ুব আলী বলেন, বেতন-ভাতার বিলে পরিচালনা কমিটির সভাপতির সই লাগে। সভাপতি না থাকায় বিল তৈরি করে ব্যাংকে পাঠানো যাচ্ছে না। আর বেতন না পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁরা কষ্টে আছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ দিতে পারছেন না। পাওনা টাকার জন্য দোকানদারেরা চাপ দিচ্ছেন।

আরেক সহকারী শিক্ষক আবদুল মোন্নাফ বলেন, পরিচালনা কমিটি না থাকায় মাদ্রাসায় নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় শিক্ষকেরা কষ্টে আছেন। 

মেনানগর গ্রামের অভিভাবক ছাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসায় রাজনীতি শুরু হয়েছে। এর বলি হচ্ছে আমাদের সন্তানেরা। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ঠিকমতো পাঠদান করাচ্ছেন না শিক্ষকেরা।’

অবসরপ্রাপ্ত সুপার মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ওই এলাকার লোকজন ভালো না। তাদের কারণে নিয়মিত কমিটি গঠন করতে পারিনি। তবে বিধিমোতাবেক অ্যাডহক কমিটিগুলো গঠন করা হয়েছে। মাদ্রাসা থেকে অবসরে গিয়েছি। এ নিয়ে আর কথা বলতে চাই না।’

উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার শান্তিপদ মজুমদার বলেন, ওই মাদ্রাসার যে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে বোর্ডে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই কমিটির বিরুদ্ধে করা অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন বোর্ডে দাখিল করা হবে।

ভারপ্রাপ্ত সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘মাদ্রাসার সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’