ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা, ক্ষুব্ধ আইনজীবীরা

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনারের-ভূমি (এসি ল্যান্ড) বরখাস্তের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবারও কর্মসূচি পালন করেছেন জেলার আইনজীবীরা। ছবি: প্রথম আলো
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনারের-ভূমি (এসি ল্যান্ড) বরখাস্তের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবারও কর্মসূচি পালন করেছেন জেলার আইনজীবীরা। ছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনারের—ভূমি (এসি ল্যান্ড) বরখাস্তের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবারও কর্মসূচি পালন করেছেন জেলার আইনজীবীরা। গত মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে প্রবীণ আইনজীবী বিনোদ বিহারী রায়কে জরিমানা করার প্রতিবাদে আইনজীবীরা এই দাবিতে আন্দোলন করছেন।

গত মঙ্গলবার বীরগঞ্জ এসি ল্যান্ড কার্যালয়ে মামলার শুনানির সময় সেখানে প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটিতে জড়ান সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিরোদা রানী রায়। এর জের ধরে বিরোদা রানী সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিনোদ বিহারীকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন। ঘটনার পরই ওই আইনজীবী জেলা আইনজীবী সমিতিতে অভিযোগ করেন। আইনজীবীদের দাবির মধ্যে ওই দিনই সহকারী কমিশনারকে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় বদলি করা হয়।

যদিও বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলম হোসেন প্রথম আলোকে বলেছেন, আইনজীবীর সঙ্গে বিরোধের জন্য নয় জনস্বার্থে সহকারী কমিশনারকে বদলি করা হয়েছে।

জেলা আইনজীবী সমিতির দাবি, আইনজীবীকে লাঞ্ছিত ও অবৈধভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এ জন্য তারা বিরোদা রানী রায় এবং ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী মহিবুল ইসলামের বরখাস্তের দাবিতে কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন শেষে মানববন্ধন করেছেন জেলার আইনজীবীরা। গতকাল বুধবারও একই দাবিতে সমিতির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে।

আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগে বিনোদ বিহারী রায় বলেন, ‘জমি সংক্রান্ত একটি মিস কেসে শুনানির জন্য এসি ল্যান্ডের কক্ষে গিয়ে ফাঁকা একটি চেয়ারে বসেন। এ সময় এসি ল্যান্ড বিরোদা রানী তাঁর কক্ষে প্রবেশের কারণ জানতে চান। তিনি নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে জমি সংক্রান্ত একটি মিস কেসের শুনানির জন্য এসেছেন বলে জানান। তখন বিরোদা রানী এ বিষয়ে ভূমি কার্যালয়ের উপ-সহকারী মহিবুলের সঙ্গে লেনদেন সেরে আসতে বলে তাঁকে দ্রুত কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে সহকারী কমিশনার কেসের শুনানি করবেন না বলে জানান। এর প্রতিবাদ জানালে বিরোদা রানী ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আইনজীবীকে ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন।’

আজকের মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. খতিব উদ্দিন, সহসভাপতি আবু আলী চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম সরকার, সাবেক সহসভাপতি নুরুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরামুল আমিন, নারী ও শিশু আদালতের পিপি মেহেবুব চৌধুরী প্রমুখ। বক্তারা অবিলম্বে বিরোদা রানী এবং মহিবুল ইসলামকে বহিষ্কারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে কথা বলার এসি ল্যান্ড বিরোদা রানী রায়ের সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে উপ-সহকারী মহিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিচার চলাকালে কক্ষে প্রবেশ করা নিয়ে সহকারী কমিশনার ও ওই আইনজীবী একে অপরের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এতে সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে আইনজীবীকে জরিমানা করা হয়। তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ জানতে চাইলে মহিবুল ইসলাম বলেন, তিনি আইনজীবীকে তর্ক করতে নিষেধ করেছিলেন। এ কারণে তাকেও জড়ানো হয়েছে।