নগর স্বেচ্ছাসেবীদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ

গত ২৯ নভেম্বর ২০১৭, প্রথম আলোর আয়োজনে ‘নগর স্বেচ্ছাসেবীদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশ হলো।


আলোচনা 

আব্দুল কাইয়ুম: নগর ও পল্লি অঞ্চলে ছোট–বড় দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য আমাদের ন্যূনতম প্রস্তুতি থাকা দরকার। এসব দুর্যোগে স্বেচ্ছাসেবী দল, যাদের আগে থেকে কিছু প্রশিক্ষণ দেওয়া থাকবে, তারা প্রাথমিকভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করার চেষ্টা করবে।
নগর অঞ্চলে এ ধরনের প্রস্তুতি আরও বেশি জরুরি। নগর স্বেচ্ছাসেবীদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে আরও কার্যকরভাবে কাজে লাগানোর বিষয়ে আজকের আলোচনা। এ বিষয়ে এখন আলোচনা করবেন নজরুল ইসলাম।

নজরুল ইসলাম: বাংলাদেশের ৩০ ভাগ মানুষ এখন নগরে বসবাস করে। খুব দ্রুতই দেশের ৫০ ভাগ মানুষ নগরে বসবাস করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমাদের নগর-পরিকল্পনায় বর্তমানে দুর্যোগের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। দুর্যোগ মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন নগর স্বেচ্ছাসেবীরা। এর প্রমাণ আমরা মর্মান্তিক রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় পেয়েছি।
নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আবার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের একটি সমস্যাও রয়েছে। সেটি হলো এখানে মানুষ স্বেচ্ছায় কাজ করেন, কিন্তু এ কাজে যদি প্রতিষ্ঠানের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা চলে আসে, তবে সেটি সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে। ফলে এই দুইয়ের মধ্যে সমন্বয় করাটা অত্যন্ত জরুরি বিষয়।
স্বেচ্ছাসেবকেরা কোনো রকম পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করেন না। ফলে নগর স্বেচ্ছাসেবকদের উৎসাহিত করার জন্য সরকার বা বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে তঁাদের কোনো পুরস্কার বা সনদ প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করা যেতে পারে।
আমাদের সমাজে সার্বিকভাবে সবার মধ্যে স্বেচ্ছাসেবার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। আর এই মানসিকতা তৈরির পথে আমরা ইতিমধ্যেই অনেক দূর এগিয়ে গেছি। আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় ৫৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি আছেন এবং নগর অঞ্চলে ইতিমধ্যেই ৩২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করা হয়েছে। আরও ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।
এখন যদি আমরা এই বিশাল স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের মাধ্যমে কাজে লাগাতে পারি, তাহলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে মডেল হিসেবে পরিচিতি পাবে বলে আমি আশা করি।

সৈয়দ মতিউল আহসান: নগর অঞ্চলের স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য একটি সাধারণ কর্মপরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন, যেখানে উল্লেখ থাকবে যে কার দায়িত্ব কী হবে। স্বেচ্ছাসেবকদের স্থায়ীভাবে প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে যেন দুর্যোগকালীন সবাই নিজ নিজ দায়িত্বটুকু সঠিকভাবে পালন করতে পারেন। এই প্রশিক্ষণ প্রদানের দায়িত্ব একটি প্রতিষ্ঠানকে নিতে হবে। ফায়ার সার্ভিস এই কাজটি করতে পারে।
স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য একটি সাধারণ দিকনির্দেশনা থাকা প্রয়োজন, যেন তঁাদের কাজের মধ্যে সমন্বয় থাকে। আর সব স্বেচ্ছাসেবক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করে একটি ডেটাবেইস তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি।
স্বেচ্ছাসেবকদের সম্মানিত করার জন্য স্থানীয় এলাকাভিত্তিক তঁাদের স্বীকৃতি দেওয়া যেতে পারে। এই স্বীকৃতি স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রদান করা যেতে পারে।

মো. শহীদ আলামিন: আমি এক বছর আগে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল িডফেন্সের একটি প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে আরবান কমিউনিটি ভলান্টিয়ার হয়েছি। এই এক বছরে আমরা ফায়ার সার্ভিসের অধীনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। এখনো কিছুদিন পরপরই প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছি নিয়মিত।
কিন্তু এই প্রকল্পের কাজ যখন শেষ হয়ে যাবে, তখন আমরা কীভাবে এই প্রশিক্ষণগুলো গ্রহণ করব, সেটি নিয়ে ভাবা দরকার।
আমরা যঁারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করি, তঁারা সবাই চাকরি বা ব্যবসা করি। এর মধ্যে যখন ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে কোনো প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়, সেখানে আমরা অংশ নিই।
কিন্তু প্রকল্প শেষ হয়ে গেলে আমরা হয়তো নিজ উদ্যোগে এমন প্রশিক্ষণে অংশ নিতে পারব না। ফলে আমাদের বর্তমান প্রশিক্ষণ একসময় অকার্যকর হতে পারে। তাই আমি বলব, আমরা যেন প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পর অভিভাবকশূন্য না হয়ে পড়ি, সেদিকে কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।

মো. ওয়াহিদ: আমি কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ২০১৪ সালে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলাম। সেই প্রশিক্ষণের পর বিভিন্ন বিদ্যালয়, উঁচু ভবন এবং সড়কে মহড়া ও র্যা লি করার মাধ্যমে সচেতনতা তৈরির কাজ করেছি। এরপর ২০১৬ সালে সিপের (সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক এনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রাম) প্রয়াস প্রকল্পের আওতায় আবার আমি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এই প্রকল্পে আমার মতো ১৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
কিন্তু সিপের প্রয়াস প্রকল্পটি চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ার পর যদি আমাদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি না থাকে, তাহলে আমরা যে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি, সেটি কাজে লাগাতে পারব না। তাই আমাদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা জরুরি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস অথবা দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট যেকোনো প্রতিষ্ঠানের আওতায় নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা যেতে পারে। সরকার সারা দেশে ৬২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই স্বেচ্ছাসেবকদের তৈরি করে ছেড়ে দিলেই হবে না। তঁাদের প্রশিক্ষণকে দুর্যোগের সময় কাজে লাগাতে হলে তঁাদের ধরে রাখতে হবে। আর সেটি করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ অত্যন্ত জরুরি।

আহমাদুল হক: ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) আওতায় আমাদের ৫৫ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। আমরা মাত্র ১০৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে এই বিশালসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবককে দিকনির্দেশনা দিচ্ছি। তাই ৬২ হাজার নগর স্বেচ্ছাসেবককে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে খুব বড় প্রতিষ্ঠানের দরকার হবে না।
তিনটি উপকূলীয় বিভাগ—চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনার ৭টি জেলায় আমরা কাজ করছি। ৭টি জেলায় আমাদের ৭টি জোনাল অফিস রয়েছে এবং ৪০টি উপজেলা অফিস রয়েছে। এই অফিসের মাধ্যমে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন ইউনিটে ভাগ করে তঁাদের পৃথক দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া রয়েছে।
সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকদের আমরা মোট ৮টি মানদণ্ডের ভিত্তিতে নিয়োগ করে থাকি। এই মানদণ্ডের বাইরে কাউকে আমরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়োজিত করি না। ফলে আমাদের সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকদের ঝরে পড়ার হার অনেক কম। নগর স্বেচ্ছাসেবকদের ক্ষেত্রে এই ঝরে পড়া একটি বড় সমস্যা।
আমার মতে, স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য যদি দূরশিক্ষণ প্রকল্প চালু করা যায়, তাহলে নগর স্বেচ্ছাসেবকসহ সারা দেশের স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ ও সমন্বয়ের কাজ অনেক বেশি সহজ হবে। পাক্ষিক অথবা মাসিক ভিত্তিতে রেডিও অথবা টেলিভিশন ব্যবহার করে এই দূরশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে।

অসিত বরণ বিশ্বাস: স্বেচ্ছাসেবক তৈরির কার্যক্রম শুরুর আগে আমরা সিটি করপোরেশন থেকে শুধু নগরের রাস্তা ও ড্রেন নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। নগরীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি নিয়ে তেমন চিন্তা করতাম না। কিন্তু এই কর্মসূচির কারণে এখন আমার ওয়ার্ডে ১০০ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন, যঁারা যেকোনো দুর্যোগে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসেন।
আমি এই কর্মসূচিতে কাজ করার সময় একটি বিষয় লক্ষ করেছি যে প্রথম দিকে স্বেচ্ছাসেবক হতে অনেকেই আগ্রহ দেখাতেন না। কারণ, স্বেচ্ছাসেবক হতে হলে তিন দিনের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে হতো। নগর অঞ্চলের সবাই চাকরি বা ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে তঁারা এই তিন দিনের কর্মশালায় অংশ নিতে আগ্রহী ছিলেন না।
কিন্তু একবার যখন তঁাদের প্রশিক্ষণে নিয়ে আসা হয়, তখন তঁারা বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তঁারা যখন দেখেন, দুর্যোগের সময় তঁারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন, তখন তঁারা অনুপ্রাণিত হন।
এই নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ক্ষেত্রে আমি মনে করি, স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশনের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিস কৌশলগত সহায়তা প্রদানে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় নীতিগত সহায়তা প্রদানে ভূমিকা রাখতে পারে।

গওহার নঈম ওয়ারা: ঐতিহাসিকভাবে আমরা খুব বেশি দিন ধরে নগরে বসবাস করা শুরু করিনি। ফলে বলা চলে আমরা এখনো পুরোপুরি নাগরিক হয়ে উঠতে পারিনি। একটি নগরকে সুন্দর ও বাসযোগ্য রাখার জন্য যে কাজগুলো করতে হয়, সেগুলো আমরা করি না সাধারণত।
ময়মনসিংহ শহরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য খুব চমৎকার একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা মূল্যায়ন করতে গিয়ে আমি সেখানে একটি সমস্যা লক্ষ করেছি। নগরের ওয়ার্ড কমিশনাররা স্বেচ্ছাসেবক দলে তঁাদের নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে অন্তর্ভুক্ত করে রেখেছেন। একই ধরনের সমস্যা চট্টগ্রামের একটি প্রকল্পে লক্ষ করা গেছে। নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের এই সমস্যাগুলো আমাদের দূর করতে হবে।
নগর স্বেচ্ছাসেবকদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে আমাদের ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় সরকারের মধ্যে সমন্বয় করে একটি ব্যবস্থা তৈরি করা যেতে পারে। আর এই সমন্বয়ের দায়িত্বটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় গ্রহণ করতে পারে।

তহমিনা জেসমিন মিতা: সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক এনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রাম (সিপ), প্রয়াস প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দুটি সিটি করপোরেশন ও একটি পৌরসভায় কমিউনিটি স্বেচ্ছাসেবক তৈরির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় আমরা স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি এ বিষয়ে সমাজে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণার কাজও করছি।
আমাদের এই প্রকল্প চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যাবে। ফলে প্রায় ৩২ হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবককে দ্রুত প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা না হলে যেকোনো দুর্যোগের সময় তঁাদের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি সমস্যা দেখা দেবে।
তাই আমাদের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত নগর স্বেচ্ছাসেবকদের জরুরি ভিত্তিতে কোনো প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে হস্তান্তর করা অত্যন্ত জরুরি।
এ ছাড়া সরকারের আরও যে ৩০ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে, তঁাদের দ্রুত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করতে হবে। আর সব স্বেচ্ছাসেবকের বিস্তারিত তথ্যসহ একটি ডেটাবেইস তৈরি করতে হবে, যেন দুর্যোগের সময় সহজে এই স্বেচ্ছাসেবকদের খুঁজে বের করা যায়।

তারিক বিন ইউসুফ: ঢাকা সিটি করপোরেশন দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ার পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে আমরা নগর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর একটি গবেষণা করি। এই গবেষণায় দেখতে পাই যে নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জায়গাটা খুব দুর্বল এবং এর কারণে আমরা পূর্ণ সুফল পাচ্ছি না।
আমাদের নগর স্বেচ্ছাসেবক তৈরির ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক বাছাই প্রক্রিয়ায় ত্রুটি রয়েছে বলে মনে করি। কারণ, এখন যঁারা স্বেচ্ছাসেবক হচ্ছেন, দেখা যাচ্ছে তঁাদের কোনো কারিগরি দক্ষতা নেই। ফলে তঁারা তঁাদের প্রশিক্ষণ পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারছেন না।
আমাদের নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ক্ষেত্রে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে রেখে এই কাজটি করতে পারি। কারণ, প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানেন যে তঁার ওয়ার্ডে কে কোথায় থাকেন এবং কে কোন কাজে দক্ষ। ফলে তঁার মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবকদের সংগঠিত করলে তঁাদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের কাজটি আমাদের জন্য অনেক সহজ হবে।
আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি প্রতিটি এলাকায়, যেখানে ছোট গুদাম আছে, সেখানে রাখা উচিত। এতে নগর স্বেচ্ছাসেবকেরা সাধারণ মানুষকে সেগুলো ব্যবহারের ধারণা দিতে পারবেন, যার মাধ্যমে তঁাদের প্রশিক্ষণের ব্যবহারিক চর্চাও সম্পন্ন হয়ে যাবে।

সত্যব্রত সাহা: আমাদের যেকোনো উন্নয়ন করতে হলে প্রথমে উন্নয়নমনস্ক মানুষ তৈরি করতে হবে। উন্নয়নকে সাদরে গ্রহণ করার মানসিকতা মানুষের মধ্যে তৈরি করতে হবে। সবকিছু কেবল সরকার, এনজিও বা সিটি করপোরেশন করবে, তা নয়। সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের যে দায়িত্ব রয়েছে, সেগুলোও ঠিকমতো পালন করতে হবে।
প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের মধ্যে এমনভাবে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে, যেন সেটি মানুষের মনে গেঁথে যায়। এটি করতে পারলে প্রত্যেক সচেতন মানুষই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের মতো কাজ করবেন।
আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বা সরকারি কোনো বাধা নেই। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অনেক আন্তরিক। এখন শুধু বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে একযোগে কাজ করে যেতে হবে।
আমাদের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা তৈরি এবং স্বেচ্ছাসেবার প্রসারের জন্য বেসরকারি খাতকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। শুধু সরকারের পক্ষে এত বড় উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে।

মো. রিয়াজ আহমেদ: নগর অঞ্চলের দুর্যোগ আর পল্লি অঞ্চলের দুর্যোগের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আমাদের নগর অঞ্চলে ভূমিকম্প–ঝুঁকি, ভবনধস, বড় ও উঁচু ভবনে আগুন লাগা এবং জলাবদ্ধতার মতো দুর্যোগের ঝুঁকি রয়েছে। পল্লি বা উপকূলীয় অঞ্চলে এই রকম ঝুঁকি নেই। তাই আমাদের নগর স্বেচ্ছাসেবকদের এসব ঝুঁকি মোকাবিলা করার মতো সক্ষম করেই প্রশিক্ষিত করতে হবে।
আমাদের যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন রয়েছে, সেখানে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর কথা বলা রয়েছে এবং এই সংগঠনগুলোকে একটি তত্ত্বাবধানকারী প্রতিষ্ঠানের আওতায় পরিচালনা করার কথা বলা রয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবকদের সম্মানী প্রদান বিষয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে, কিন্তু একটা বিষয় মনে রাখতে হবে যে কাজটির নামই স্বেচ্ছাসেবা, এখানে কোনো প্রকার সম্মানীর আশায় কাজ করার অবকাশ নেই।
সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে এই কাজ করতে হবে। সম্মানী প্রদানের প্রচলন শুরু হলে কাজটি হয়তো আর স্বেচ্ছাসেবা থাকবে না।
তবে যঁারা স্বেচ্ছাসেবা দিচ্ছেন, তঁাদের সামাজিকভাবে বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।

এম খালিদ মাহমুদ: আমাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইনে স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে জাতীয় পর্যায়ের একটি সংগঠন করার কথা বলা রয়েছে। আমরা সেই সংগঠন তৈরি করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ একান্তই সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে স্বেচ্ছায় করতে হবে। আমরা যঁাদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বাছাই করি, তঁাদের সবারই নিজ নিজ পেশা থাকে। তঁার পেশার পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ব থেকে তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবেন, এটাই এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।
আমাদের ফায়ার সার্ভিস নিয়মিতভাবে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। আমার জানামতে, তাদের সম্ভবত একটি ডেটাবেইস রয়েছে। এখন অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে যেসব স্বেচ্ছাসেবক তৈরি হচ্ছে, তাদের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের একটি সমন্বয় সাধন করা যেতে পারে। যত দিন নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের কোনো ব্যবস্থা না হচ্ছে, তত দিন তঁারা ফায়ার সার্ভিসের আওতায় কাজ করতে পারেন।

রিফাত বিন সাত্তার: স্বেচ্ছাসেবকদের প্রণোদনা প্রদানের বিষয়টি আলোচনায় আসছে। আমরা সবাই একমত যে এখানে প্রণোদনার বিষয়টি আনা ঠিক হবে না। এতে এই কর্মসূচি তার মূল লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যাবে। কিন্তু আমি মনে করি, যঁারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন, তঁাদের কাছ থেকে আমাদের জানা দরকার যে তঁারা প্রণোদনার জায়গা থেকে কী চাচ্ছেন।
আমাদের নগর স্বেচ্ছাসেবকদের বেশির ভাগই তরুণ। এই তরুণদের কাছ থেকে আমাদের জানা উচিত যে তঁারা কী চান।
বেসরকারি খাতকে স্বেচ্ছাসেবক কর্মসূচিতে যুক্ত করার কথা হয়েছে। আমার মনে হয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে স্বেচ্ছাসেবক তৈরিতে কাজ করা উচিত, এই মানসিকতা বেসরকারি খাতের মধ্যে আমরা এখনো গড়ে তুলতে পারিনি। বেসরকারি খাতে এই মানসিকতা তৈরিতে আমাদের কাজ করার দরকার রয়েছে।
আমরা সেভ দ্য চিলড্রেনের পক্ষ থেকে নগর স্বেচ্ছাসেবক তৈরি এবং তঁাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে কাজ করার জন্য আমাদের আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে।
আমরা সরকার এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে আগ্রহী। স্বেচ্ছাসেবকদের বিস্তারিত তথ্য সংরক্ষণ করে ডেটাবেইস তৈরির কাজেও আমরা সহায়তা করতে পারি।

আলী আহাম্মেদ খান: জনসাধারণের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করার জন্য এবং তঁাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য অনেক সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু এই কাজগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় দেখা যায় যে আমরা প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করছি কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক কোনো কাঠামো না থাকার কারণে তঁারা একসময় হারিয়ে যাচ্ছেন। ফলে নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণও জরুরি।
স্বেচ্ছাসেবকদের প্রণোদনার বিষয়ে অনেক কথা হচ্ছে। একটা বিষয় এখানে বিবেচনা করতে হবে যে উন্নত দেশের স্বেচ্ছাসেবক আর আমাদের দেশের স্বেচ্ছাসেবকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট কিন্তু ভিন্ন। উন্নত দেশের বেশির ভাগ মানুষই সচ্ছল।
ফলে তঁারা স্বেচ্ছাসেবক হতে বেশি আগ্রহী। কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার জন্য দৈনিক বা সাপ্তাহিক একটা সময় দিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে অনেক সময় আগ্রহী হন না। তঁাদের আগ্রহী করে তুলতে প্রণোদনা না হলেও কোনো উপায়ে স্বীকৃতি প্রদানের ব্যবস্থা অন্তত করা উচিত।
বর্তমান সরকার সারা দেশে ছয় শতাধিক ফায়ার স্টেশন তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। আমি মনে করি, এই ফায়ার স্টেশনগুলো স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ এবং প্রশিক্ষণের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে পারে।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করার আশ্বাস আমি দিচ্ছি।

ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু: দুর্যোগের সময় দুর্গত মানুষের পাশে দঁাড়ানো এবং স্বেচ্ছাসেবার ক্ষেত্রে পৃথিবীর যেকোনো জাতির চেয়ে আমরা বাঙালি জাতি এগিয়ে আছি। আর এ কারণেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ বিশ্বে অগ্রগামী।
আমি বলব, জাতি হিসেবেই আমরা স্বেচ্ছাসেবী। এখন শুধু আমাদের এই কর্মকাণ্ডকে সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে আসার জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে।
আজকের আলোচনায় উঠে এসেছে এই যে বিশালসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক তৈরি হচ্ছেন, তঁারা কীভাবে কাজ করবেন, সে বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দিকনির্দেশনা নেই বা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নেই। আমাদের সরকার কিন্তু এটি করার জন্য ইতিমধ্যেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিলে পরিষ্কারভাবে বলেছেন যে সব স্বেচ্ছাসেবক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১০ লাখ মানুষ নিহত হওয়ার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) শুরু করেছিলেন। আজকে এই সিপিপির অবদানে আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা থেকে অনেকটা নিরাপদ।
সিপিপির অনেক শক্তিশালী একটি স্বেচ্ছাসেবক দল রয়েছে। আমাদের নগর স্বেচ্ছাসেবকদেরও এই সিপিপির আদলে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা যেতে পারে।
আজকের এই আলোচনায় আপনারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন এবং আপনাদের অভিজ্ঞতার আলোকে অনেক মূল্যবান পরামর্শ তুলে ধরেছেন।
আপনাদের পরামর্শগুলো বাস্তবায়ন করা সরকারের অন্যতম দায়িত্ব। আপনাদের পরামর্শ বাস্তবায়নের জন্য আমরা সর্বাত্মক সহায়তা করব এবং আশা করব, আপনারা ভবিষ্যতেও একইভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আমাদের পাশে থাকবেন।

আব্দুল কাইয়ুম: আমরা দুর্যোগের সময় একে অন্যের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই। একত্রে কাজ করা আমাদের জাতিগত ঐতিহ্য। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবীদের কাজ নির্দিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় সমন্বিতভাবে সুসম্পন্ন হতে হবে।
আজকের আলোচনায় অংশগ্রহণ করার জন্য সবাইকে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
সহযোগিতায়:
 নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ জরুরি
 নগর স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবহারিক চর্চার ব্যবস্থা থাকা দরকার
 স্বেচ্ছাসেবক বাছাইকরণে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা থাকা প্রয়োজন
 স্বেচ্ছাসেবকদের বিস্তারিত তথ্যসহ একটি ডেটাবেইস করতে হবে
 নগর অঞ্চলের স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন
 স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা প্রয়োজন
 স্বেচ্ছাসেবকদের উৎসাহিত করার জন্য স্বীকৃতি সনদ দেওয়া যেতে পারে

যাঁরা অংশ নিলেন
ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু : মাননীয় সাংসদ, সভাপতি, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংসদীয় স্থায়ী কমিটি
নজরুল ইসলাম : সভাপতি, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ
আলী আহাম্মেদ খান : মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স
মো. রিয়াজ আহমেদ : মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর
সত্যব্রত সাহা : অতিরিক্ত সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়
এম খালিদ মাহমুদ : যুগ্ম সচিব, পরিচালক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর
তারিক বিন ইউসুফ : তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন
অসিত বরণ বিশ্বাস : কাউন্সিলর, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন
আহমাদুল হক : পরিচালক (প্রশাসন), ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)
গওহার নঈম ওয়ারা : শিক্ষক, ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট
অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
রিফাত বিন সাত্তার : পরিচালক, প্রোগ্রাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কোয়ালিটি, সেভ দ্য চিলড্রেন
সৈয়দ মতিউল আহসান : উপপরিচালক, হিউম্যানিটেরিয়ান ডিপার্টমেন্ট, সেভ দ্য চিলড্রেন
তহমিনা জেসমিন মিতা : উপনির্বাহী পরিচালক, সোশ্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক এনহ্যান্সমেন্ট প্রোগ্রাম, সিপ
মো. ওয়াহিদ : কমিউনিটি ভলান্টিয়ার, ৩ নম্বর ওয়ার্ড, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন
মো. শহীদ আলামিন : কমিউনিটি ভলান্টিয়ার, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন
সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম : সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো