৯০টি গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বত্তরা

নবাবগঞ্জ উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে দুর্বৃত্তরা গত রোববার আমগাছ কেটে ফেলে l প্রথম আলো
নবাবগঞ্জ উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামে দুর্বৃত্তরা গত রোববার আমগাছ কেটে ফেলে l প্রথম আলো

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে দুর্বৃত্তরা ৩১ বছর বয়সী ৯০টি আমগাছ কেটে ফেলেছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রহিম বাদশা, চরকাই রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মনিরুজ্জামানসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে নবাবগঞ্জ থানায় এজাহার ও ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আমবাগানের মালিক দাবিদার নায়েব আলী সরকার নামের এক ব্যক্তি। তবে নায়েব আলীর দাবি কেটে ফেলা গাছের সংখ্যা ১১৩টি।

এদিকে বন বিভাগ জায়গাটি নিজেদের দাবি করে গাছগুলো জব্দ করেছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হবে জানিয়েছে বন বিভাগ।

গত রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের মাহমুদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

গতকাল সোমবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, নবাবগঞ্জের দাউদপুর-হলাইজানা টুপিরহাট হয়ে ভাদুরিয়া যাওয়ার সড়কের পাশে বাগানের মধ্যে সারি সারি কাটা আমগাছ পড়ে আছে। ভোর থেকেই শত শত লোক গাছগুলো দেখতে আসছেন। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করা হয়।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে নায়েব আলী সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৮৬ সালে তিনি ৩ একর ১২ শতক জমি কিনে আমবাগান করেন। গত ইউপি নির্বাচন নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান রহিম বাদশার সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। নির্বাচনের পরে বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় রহিম বাদশা বিভিন্ন সময়ে নায়েব আলীকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

নায়েব আলী অভিযোগ করেন, সকালে বন বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে জায়গাটি বন বিভাগের গেজেটভুক্ত বলে দাবি করে গাছগুলো জব্দ করা শুরু করেন। সারা রাত ধরে এতগুলো গাছ কাটা হলো, বন বিভাগ কী করল?

নায়েব আলী আরও অভিযোগ করেন, কয়েক দিন আগে বন বিভাগের চরকাই রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মনিরুজ্জামান এবং ভাদুরিয়া বিটের বিট কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ওই জায়গা রহিম বাদশাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চুক্তি করেন। সেই জায়গা বুঝিয়ে দিতে উভয়ে যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে নায়েব আলী অভিযোগ করেন।

রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী মনিরুজ্জামান বলেন, গাছগুলো নায়েব আলী রোপণ করেছেন এটি সত্য। তবে জায়গাটি বন বিভাগের গেজেটভুক্ত। তাই বিধি অনুযায়ী গাছগুলো তাঁরা জব্দ করেছেন। পরে গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী মামলা দেওয়া হবে। চেয়ারম্যান রহিম বাদশার সঙ্গে যোগসাজশে গাছ কাটার অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি। বিট কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জব্দ করা গাছের সংখ্যা ৯০টি।

এ বিষয়ে মাহমুদপুর ইউপির চেয়ারম্যান রহিম বাদশার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচার দাবি করেছেন।

নবাবগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল হাকিম আজাদ গাছ কাটার ঘটনায় এজাহার পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।