পদ হারালেন ছাত্রলীগ নেতা!

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায় কামরুল ইসলাম (২২) নামের এক যুবককে দিগম্বর করে পেটানোর অভিযোগ ওঠার পর স্থানীয় সাংসদের নির্দেশে ছাত্রলীগের এক নেতা সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন।

গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার পেড়াবাড়িয়া বাজারে কামরুলকে দিগম্বর করে পেটান ছাত্রলীগের ওই নেতা। তবে ছাত্রলীগের ওই নেতার বিরুদ্ধে আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

বাগাতিপাড়া থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলিফ মাহমুদকে বিভিন্ন সময় টাকার বিনিময়ে মাদক এনে দিতেন উপজেলার চকশোভপুর গ্রামের ওমর মণ্ডলের ছেলে কামরুল ইসলাম। সম্প্রতি তাঁদের দুজনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে কামরুল মাদক সরবরাহ বন্ধ করে দেন। এর জের ধরে সোমবার রাতে কামরুলকে নিজের দলীয় কার্যালয়ে ডেকে আনেন আলিফ। এ সময় পুনরায় আলিফ পুনরায় মাদক সরবরাহ করার প্রস্তাব দিলে কামরুল তাতে অস্বীকৃতি জানান। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কামরুলকে দিগম্বর করে পেটাতে থাকেন আলিফ। কামরুল নিজেকে রক্ষা করতে বিবস্ত্র অবস্থায় চিৎকার করতে করতে বাইরে বেরিয়ে এসে বাজারের এক দোকানে ঢুকে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ক্ষমতার চরম অপব্যবহার করেছেন ওই ছাত্রলীগ নেতা। নির্যাতনের ভয়ে আমি ও ওই যুবক ছাত্রলীগ নেতা আলিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারছি না। তবে প্রশাসনের উচিত তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।’

ঘটনাটি স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে মুঠোফোনে জানার পর স্থানীয় সাংসদ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) মো. আবুল কালাম ঘটনাস্থালে ছুটে আসেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি তৎক্ষণাৎ আলিফ মাহমুদকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন।

নাটোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান জেমস জানান, স্থানীয় সাংসদের নির্দেশে বাগাতিপাড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নিজেই পদত্যাগ করেছেন বলে শুনেছি। আমরাও সাংগঠনিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা আলিফ মাহমুদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘৫০০ টাকা চুরি করায় কামরুলের সঙ্গে তাঁর ভুল বোঝাবুঝি হয়। পরে বিষয়টা মিটমাট করে নিয়েছি। বিবস্ত্র করার মতো ঘটনা ঘটেনি।’ পদত্যাগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। তবে কেউ এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’