হকারহীন ফুটপাত, জনমনে স্বস্তি

হকারমুক্ত নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো
হকারমুক্ত নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাত। গতকাল তোলা ছবি l প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জ নগরের বঙ্গবন্ধু সড়কের দুই পাশের ফুটপাতগুলো হকারমুক্ত করা হয়েছে। দুদিন ধরে হকারমুক্ত ফুটপাতে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটতে পেরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন পথচারীরা।

ফুটপাত হকারমুক্ত থাকায় নগরে গত দুদিন তেমন কোনো যানজটও দেখা যায়নি। প্রধান সড়কের দুপাশে পুলিশের টহল দেখা গেছে। এ ছাড়া পুলিশকে হকারদের ধাওয়া দিতেও দেখা গেছে। নগরবাসী পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, চাষাঢ়া গোল চত্বর এলাকায় সোনালী ব্যাংক, সমবায় মার্কেট, নারায়ণগঞ্জ কিন্ডারগার্টেন, লুৎফা টাওয়ার, সায়াম প্লাজা, জীবন বীমা করপোরেশন ভবন, সমবায় ভবনের নবনির্মিত মার্কেট, সাধু পৌলের গির্জার সামনের সড়কে ফুটপাতে কোনো হকার নেই। চাষাঢ়া থেকে ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকা পর্যন্ত হেঁটে পুলিশের টহল দলকে কাজ করতে দেখা গেছে। কয়েকজন হকার বসার চেষ্টা করলেও পুলিশের একাধিক টহল দলের কারণে বসতে পারেননি। ফুটপাতগুলো দিয়ে পথচারীসহ জনসাধারণ নির্বিঘ্নে চলাচল করেছেন।

নগরের জামতলা এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ পায়েল চৌধুরী গতকাল দুপুরে তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে চাষাঢ়া সমবায় মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসেন। তিনি বলেন, ‘পুরো নগরের ফুটপাতগুলো ফাঁকা। পথচারীরা স্বস্তিতে হাঁটাচলা করতে পারছেন। আমরা এই রকম একটি নগর চাই। পুলিশ চাইলে যে নগরের ফুটপাতগুলো হকারমুক্ত রাখা যায়, এটা তার প্রমাণ।’

বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা লোকমান আহম্মেদ বলেন, নগরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কের দুই পাশের ফুটপাত সব সময় হকারদের দখলে থাকে। ফলে পথচারীদের বাধ্য হয়ে সড়ক দিয়ে হাঁটতে হয়। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে গত দুদিন নগরের ফুটপাতগুলো হকারমুক্ত। এতে মানুষ নির্বিঘ্নে ফুটপাত দিয়ে হাঁটাচলা করতে পারছেন।

একরামপুর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, চাষাঢ়া থেকে দুই নম্বর রেলগেট পর্যন্ত কোথাও হকার নেই। ফুটপাতে হকার না থাকায় নগরে যানজটও নেই। কিন্তু এ অবস্থা কয় দিন থাকে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, পুলিশ চাইলে যেকোনো পরিস্থিতি পরিবর্তন করা সম্ভব, এটা হচ্ছে তার প্রমাণ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নগরবাসীর ভোগান্তি দূর করার জন্য হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ফুটপাতগুলো হকারমুক্ত রাখতে অভিযান অব্যাহত থাকবে। ফুটপাত হকারমুক্ত রাখা পুলিশের একার পক্ষে সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি রাজনীতিবিদসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

গত সোমবার বড়দিন উপলক্ষে নগরের বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত সাধু পৌলের গির্জার সামনের ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদসহ বেশ কিছু বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শাহীন শাহ্ পারভেজকে প্রত্যাহার করা হয়। এরপর থেকে জেলা পুলিশ ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদে অভিযান শুরু করে। এতে দৃশ্যপট পাল্টে যায়। পুরো নগরের ফুটপাতগুলো হকার দখলমুক্ত হয়ে যায়।