এক গাছে ৭০ মৌচাক

গজনী অবকাশকেন্দ্রের শতবর্ষী বটগাছে ৭০টি মৌচাক বেঁধেছে মৌমাছির দল l প্রথম আলো
গজনী অবকাশকেন্দ্রের শতবর্ষী বটগাছে ৭০টি মৌচাক বেঁধেছে মৌমাছির দল l প্রথম আলো

‘মৌমাছি মৌমাছি/ কোথা যাও নাচি নাচি/ দাঁড়াও না একবার ভাই,/ ওই ফুল ফোটে বনে/ যাই মধু আহরণে,/ দাঁড়াবার সময় তো নাই।’

কবি নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্যের সেই মৌমাছিরা এবার বাসা বেঁধেছে শেরপুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ের গজনী অবকাশকেন্দ্রের শতবর্ষী এক বটগাছে। তা-ও আবার একটি-দুটি নয়; ওই একটি গাছেই মৌমাছির দল ৭০টি চাক বেঁধেছে। একসঙ্গে এতগুলো মৌচাক দেখার জন্য এখন প্রতিদিনই গজনী অবকাশকেন্দ্রে ভিড় করছে উৎসুক মানুষ। আর ভ্রমণপিপাসুরা তো আছেনই।

গজনী অবকাশকেন্দ্রে ৮ ডিসেম্বর গিয়ে দেখা গেছে, অবকাশকেন্দ্রের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষী বটগাছটি। গাছটির গোড়া থেকে শুরু করে মগডাল পর্যন্ত চাক বেঁধে নির্বিঘ্নে বাস করছে মৌমাছির দল। মৌমাছির গুঞ্জনে পুরো এলাকা মুখরিত। দর্শনার্থীরা গজনী অবকাশে বেড়াতে এসে ওই বটগাছের কাছে কিছুক্ষণের জন্য হলেও থমকে দাঁড়াচ্ছেন।

শেরপুর সদর উপজেলার খুঁজিউরা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অবকাশে বেড়াতে এসে দেখলাম একটি বটগাছে ৭০টি মৌচাক। একটি গাছে এতগুলো চাক হতে পারে, তা কখনো ভাবতে পারিনি। এই প্রথম দেখলাম।’

আরেক দর্শনার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মৌচাকগুলোতে কোনো ঢিলাঢিলি নাই। সে জন্য মৌমাছিরা নির্বিঘ্নে বসবাস করতে পারছে। এটি দর্শনার্থীদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়।’

শেরপুরের বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক বলেন, অবকাশকেন্দ্রের বটগাছে মৌচাক করা মৌমাছিগুলো ডাচ জাতের বন মৌমাছি। এরা সংঘবদ্ধভাবে এক জায়গায় থাকতে ভালোবাসে। এ ছাড়া গারো পাহাড়সংলগ্ন বনে এখন প্রচুর ফুল রয়েছে। এসব ফুল থেকে মধু আহরণের সহজ উৎস হওয়ায় মৌমাছিগুলো প্রাচীন এ বটগাছটিতে বাসা বেঁধেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঝিনাইগাতীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা করিম বলেন, একটি গাছে এতগুলো মৌচাক সচরাচর দেখা যায় না। এসব মৌচাক ভ্রমণপিপাসুদের কাছে গজনী অবকাশকেন্দ্রের আকর্ষণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

জেলা প্রশাসক ও অবকাশকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের সভাপতি মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, বটগাছটিতে ৭০টি মৌচাক রয়েছে। এসব মৌচাক থেকে কেউ যেন মধু আহরণ এবং মৌমাছিদের বিরক্ত না করে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে দর্শনার্থীরা যাতে মৌচাক দেখে আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি নিরাপদ দূরত্বে থেকে ছবিও তুলতে পারে, সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে।