ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু ২০ দিন দেরিতে

নির্ধারিত সময়ের ২০ দিন পর সুনামগঞ্জে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরে গতকাল শনিবার বাঁধের কাজ উদ্বোধন করেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান।
নীতিমালা অনুযায়ী, হাওরের বাঁধ নির্মাণের কাজ ১৫ ডিসেম্বর শুরু হওয়ার কথা। কাজ শেষ হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। তবে এবার হাওর থেকে পানি ধীরে নামায় বাঁধের প্রাক্কলন তৈরিসহ অন্য কাজ শেষ হতে বিলম্ব হয়েছে। একইভাবে হাওরে বোরো আবাদ পিছিয়েছে ২০–২৫ দিন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সুনামগঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলার প্রায় ৫০টি হাওরের ফসল রক্ষার জন্য ৫৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের কাজ হবে। এ জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৬৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। গত ৩ জানুয়ারি বাঁধের কাজের ১ হাজার ৮৮টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জে গত এপ্রিলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ১৫৪টি হাওরের বোরো ধান তলিয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেলার ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৯০টি কৃষক পরিবার। গত মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদ হয়েছিল ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৮ হেক্টর। এবার ২ লাখ ২২ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, এবার জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে বাঁধের কাজে সরাসরি যুক্ত করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে জেলা ও উপজেলা কমিটি। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা কমিটির প্রধান। বাঁধ নির্মাণে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করবে উপজেলা কমিটি। প্রতিটি পিআইসি সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকার কাজ করতে পারবে। স্থানীয় কৃষক ও সুবিধাভোগীদের নিয়ে এসব পিআইসি গঠন করা হয়েছে।
নলুয়ার হাওরের রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ঘোষগাঁও এলাকায় বাঁধ নির্মাণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী যথাসময়ে কাজ শেষ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত শোনা হবে না। কাজে কোনো ধরনের গাফিলতি ও অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার বাঁধের কাজে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে। এবার হাওরের ফসল রক্ষা করতেই হবে।
সুনামগঞ্জে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. এমরান হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়া, জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) বিজন কুমার দেব, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হোসাইন মোহাম্মদ হাই, বাঁধ নির্মাণ তদারকে গঠিত উপজেলা কমিটির সদস্য রেজাউল করিম প্রমুখ।
নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর বলেন, বাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দের টাকা কমিটিকে দেওয়া হবে। কাজ শুরুর আগে প্রতিটি পিআইসি কাজের ২৫ ভাগ টাকা অগ্রিম পাবে।