দরপত্র জমা নিয়ে আ.লীগের দুই পক্ষের হাতাহাতি

ময়মনসিংহের ত্রিশালে গতকাল বুধবার সতাটি স্কুলের ভবন নির্মাণের দরপত্র বাক্সে জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের হাতাহাতি, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উপজেলা পরিষদে পুলিশ থাকলেও তারা পরিষদের ভবনের গেটে তালা লাগিয়ে ভেতরে অবস্থান করে। পরে পুলিশ সবাইকে হটিয়ে দিলে ঠিকাদারেরা নির্ধারিত সময়ের পর দরপত্র জমা দেন।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে জানা যায়, গতকাল সকাল ১০টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত উপজেলার ১৬টি স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য শিডিউল জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল। সকাল ১০টা থেকেই আওয়ামী লীগের এক পক্ষের সমর্থকেরা উপজেলা পরিষদ গেটে অবস্থান নেন। সে সময় ইসমাইল হোসেন ইসলাম নামের একজন ঠিকাদার দরপত্র জমা দিতে ভেতরে যেতে চাইলে লোকজন বাধা দেন এবং টেনেহিঁছড়ে বের করে দেন।
পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল হক উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। এরপর আওয়ামী লীগের নেতা মোতালেব হোসেন ও ঠিকাদার আবুল কালাম দরপত্র জমা দিতে গেলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হলে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
উপজেলা প্রকৌশলী এনায়েত কবীর জানান, দরপত্র জমা দিতে কেউ বাধা দেননি। পরিষদ গেটে পুলিশের তালা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তালা খুলে দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন আছে।
ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আমি শিডিউল জমা দিতে গেলে আমাকে কয়েকজন বাধা দেয়। এরা আওয়ামী লীগের সমর্থক। এ সময় পুলিশ তাদের সহযোগিতা করে। এসআই হাবীব আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।’
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এ বি এম আনিছুজ্জামান বলেন, ‘আমি সব সময় এসবের বিরুদ্ধে। কেউ আমার নাম বললেই সে আমার লোক হবে, এটা ঠিক না।’
ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আবদুল মতিন সরকার বলেন, ‘আমি সারা দিন ভালুকায় ছিলাম। এ রকম কোনো ঘটনা শুনিনি। বিষয়টির খোঁজ নিচ্ছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা জানান, ১৬টি দরপত্রের সাতটি প্যাকেজে সাত কোটি টাকার কাজ সমঝোতা করে আওয়ামী লীগের এক পক্ষের নেতা-কর্মীরা ভাগ করে নেওয়ার জন্য তাঁদের পছন্দের লোক ছাড়া কাউকে দরপত্র ফেলতে দেননি। এ সময় আওয়ামী লীগের অপর পক্ষ দরপত্র জমা দিতে চাইলে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, শেষ পর্যন্ত ৭২টি দরপত্র জমা পড়ে।