কমিটি ছাড়াই ছাত্রদলের কার্যক্রম

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা ও ভবানীগঞ্জ পৌরসভা ছাত্রদলের কমিটি সাড়ে নয় মাস ধরে নেই। কমিটি ছাড়াই চলছে ছাত্রদলের কার্যক্রম। এতে সাংগঠনিক কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। পদ পেতে সম্ভাব্য নেতা-কর্মীরা তৎপরতা শুরু করলেও কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেই। এতে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

তবে জেলার নেতারা বলেছেন, নতুন কমিটি গঠনের বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী বলেন, গত ২৫ মার্চ জেলা বিএনপির নেতারা স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের কিছু নেতার হাতে ভবানীগঞ্জ গুদাম মোড়ে লাঞ্ছিত হন। জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গে ছাত্রদলের জেলা শাখার সভাপতিও ছিলেন। ওই রাতেই শহরে ফিরে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম বাগমারা উপজেলা ও ভবানীগঞ্জ পৌরসভা ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, বাগমারা উপজেলা ও ভবানীগঞ্জ পৌরসভা ছাত্রদলের কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। 

এ ছাড়া ছাত্রদলের নেতারা একই সঙ্গে যুবদলের নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধি ও সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্যই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর থেকে উপজেলা ও ভবানীগঞ্জ পৌরসভা ছাত্রদল চলছে কমিটি ছাড়াই।
আগের কমিটিতে থাকা অনেক নেতাই সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। অনেকে পদও পেয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাগমারা ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান বলেন, তাঁদের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর আর নতুন করে কমিটি গঠন করা হয়নি। এখন তিনি সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০-১২ জন ছাত্রদল কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনটির কমিটি না থাকায় তাঁরা সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। কিছুদিন আগে তাঁরা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীও পালন করতে পারেননি। সামনে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ঘোষণা আসবে, ছাত্রদলকেই কর্মসূচি পালন করতে হবে, যদি কমিটি না থাকে তাহলে মাঠে থাকব কীভাবে?
এদিকে নতুন কমিটিতে পদ পাওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু করা অন্তত আটজন প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার পর থেকে তাঁরা মাঠে আছেন। পদ পাওয়ার জন্য বিএনপি ও ছাত্রদলের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। তবে সাড়ে নয় মাসেও নতুন কমিটির বালাই নেই। এটা সংগঠনের জন্য শুভকর নয়।
ভবানীগঞ্জ পৌর ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ বলেন, তিনি এবার উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি প্রার্থী। এ জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তবে দ্রুত কমিটি দেওয়া প্রয়োজন। একই ধরনের মন্তব্য করেছেন দলের তৃণমূলের কর্মীরা।
পৌরসভা ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান বলেন, এখন পদ ছাড়াই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করায় ছাত্রদলের কর্মীরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছেন। সংগঠনের স্বার্থে দ্রুত কমিটি গঠন করা দরকার।
এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য জেলা ছাত্রদলের সভাপতির সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তাঁদের নজরে রয়েছে। জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদনের পরই বাগমারাসহ সব ইউনিটের কমিটি গঠনের উদ্যোগ রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক কারাগারে থাকায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। তবে কমিটি না থাকায় সাংগঠনিক কিছু সমস্যা হচ্ছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।