বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বাঘেরবাজার এলাকার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক সফরে যাওয়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পার্কের ইজারাদারের লোকজন হামলা চালিয়েছেন। এতে দুই শিক্ষকসহ কমপক্ষে ২০ শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল বুধবার এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী, পার্ক কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ১২ জন শিক্ষক ও ২০০ শিক্ষার্থী গতকাল সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক সফরে আসেন। এর আগেই অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা ও পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ সফরের জন্য অনুমতি নিয়ে রাখেন। গতকাল সকালে পার্কে ঢুকতে প্রধান ফটকে অনুমতিপত্র দেখালে ইজারাদার কবির হোসেনের লোকজন বাধা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁদের বাগিবতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ইজারাদারের লোকজন লাঠিসোঁটা ও হকিস্টিক নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। এতে শিক্ষক মোহামঞ্চদ আলী আকন্দ, ফখরুদ্দিন আহমেঞ্চদ, শিক্ষার্থী খায়রুজ্জামান, এহসানুল হক, তানভীর, কবির, সবুজ, দেওয়ান, সাদ্দাম, তানভীর রহমান, রোকন-উদ-দৌলা, মনিরুল, আইয়ুব আলী, সাদ্দাম হোসেন, সঞ্জয় কুমার এবং পার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা শিবপ্রসাদ, রফিকুল ইসলাম, রুমান, মিজান, সোহেল, হাসানসহ প্রায় ২০ জন আহত হন।
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে রফিকুল ইসলাম (২৫) নামের ইজারাদারের পক্ষের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি শ্রীপুর উপজেলার ইদ্রবপুর এলাকার শুকুর আলীর ছেলে। আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
খবর পেয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নূরুল ইসলাম ও শ্রীপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি তালিম হোসেন শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন।
পার্কসংলগ্ন এলাকার ব্যবসায়ী সোলায়মান সরদার বলেন, এখানে আসা লোকজন প্রায়ই ইজারাদারের লোকজনের দুর্ব্যবহারের শিকার হন। এতে দিন দিন পার্কে দর্শনার্থী কমছে।
উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি তালিম হোসেন বলেন, তাঁরা বন সংরক্ষণ বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে পার্ক সফরে আসেন। তার পরও পার্কে ঢোকার গেটের দায়িত্বে থাকা লোকজন বাধা দেন। কয়েকজন শিক্ষার্থী কারণ জানতে চাইলে ওই লোকেরা উত্তেজিত হয়ে হামলা চালান।
এ ব্যাপারে কথা বলতে ইজারাদার ও তাঁর লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
বন বিভাগ থেকে নিয়োগ পাওয়া পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিবপ্রসাদ ভট্টাচার্য ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইজারাদারের লোকজন প্রায়ই এমনটা করে থাকেন। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। কিন্তু অজানা কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তবে এ ধরনের ব্যবহারের জন্য ইজারাদারদের শাস্তি হওয়া উচিত বলে বন কর্মকর্তা মত প্রকাশ করেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।