রাজনীতির 'চক্করে' মঞ্জুর হত্যা মামলা

.
.

আবার রাজনীতির ‘চক্করে’ পড়েছে মেজর জেনারেল এম এ মঞ্জুর হত্যা মামলাটি। শেষ মুহূর্তে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক বদলির হওয়ায় ১০ ফেব্রুয়ারি ধার্য তারিখে মামলাটির রায় হচ্ছে না আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে চলমান এ মামলাটি প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের ভোট ও জোটের রাজনীতির কূটকৌশলের কারণে গত ১৯ বছর ধরে রাজনীতির ‘চক্করে’ ঘুরপাক খাচ্ছে। এ পর্যন্ত এ মামলার ২২ জন বিচারক পরিবর্তন হয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে বর্তমান সরকারের আমলেই চারজন বিচারক পরিবর্তন করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির নেতাদের অভিযোগ, এরশাদ ও তাঁর দলকে পক্ষে রাখতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি, যখন যে দলই ক্ষমতায় থাকে তারা মামলাটিকে ‘ঘুঁটি’ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে এরশাদের রাজনৈতিক সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে চলছে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলোর গতি-প্রকৃতি।
ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মঞ্জুর হত্যা মামলার বিচার চলছে। আদালতের সর্বশেষ আদেশ অনুযায়ী, ১০ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুর হত্যা মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য রয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে গত ২৯ জানুয়ারি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক এক আদেশে বিচারক হোসনে আরা আকতারকে পরিবর্তন করা হয়। তাঁকে প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। তাঁর জায়গায় আসেন দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হাসান মাহমুদ ফিরোজ।
মঞ্জুর হত্যা মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদসহ মোট পাঁচজনের বিচার চলছে। এর মধ্যে এরশাদ অভিযোগপত্রভুক্ত প্রধান আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে এরশাদের নির্দেশে কতিপয় সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজত থেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করেছেন। এ বিষয়ে এরশাদের বিরুদ্ধে বিমানবাহিনীর তৎকালীন প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল সদরউদ্দীনসহ সশস্ত্র বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ও ১৬৪ ধারায় তদন্ত কর্মকর্তা ও আদালতে জবানবন্দি দেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন। তখন চট্টগ্রামে অবস্থিত সেনাবাহিনীর ২৪তম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার স্টাফ (জিওসি) ছিলেন মোহাম্মদ আবুল মঞ্জুর। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর আত্মগোপনে যাওয়ার পথে তাঁকে পুলিশ আটক করে। এরপর ২ জুন মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে হাটহাজারী থানার পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরের ভাই আইনজীবী আবুল মনসুর আহমেদ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন।
তাতে অভিযোগ করা হয়, জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশের কাছ থেকে মেজর কাজী এমদাদুল হক সেনা হেফাজতে নেন। পরে তাঁকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়।
১৯৯৫ সালের ২৭ জুন এরশাদসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি আসামিরা হলেন মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল লতিফ (ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান), মেজর কাজী এমদাদুল হক, লে. কর্নেল শামসুর রহমান শামস ও লে. কর্নেল মোস্তফা কামাল উদ্দিন। এ ছাড়া তদন্তে ব্রিগেডিয়ার এ কে এম আজিজুল ইসলাম ও নায়েক সুবেদার আবদুল মালেকের বিরুদ্ধেও হত্যায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ কে এম আজিজুল ইসলাম ১৯৯২ সালে ও আবদুল মালেক ১৯৯১ সালে মারা যান। তাই তাঁদের আসামি করা হয়নি। অভিযোগপত্রে বলা হয়, এরশাদের নির্দেশে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মঞ্জুরকে হত্যা করে এবং লাশ গোপন করার চেষ্টা করেন।
মঞ্জুর হত্যার মামলার দায়ের পর ১৯৯৫ সালের ১ মার্চ আসামি এমদাদুল হক, ১২ মার্চ মোহাম্মদ আবদুল লতিফ ও শামসুর রহমান এবং ১৮ জুন মোস্তফা কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর আগে থেকেই কারাগারে থাকা এরশাদকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় ওই বছরের ১১ জুন। তাঁরা সবাই বর্তমানে জামিনে আছেন।
নব্বইয়ের গণ-অভ্যুথানে এরশাদের পতনের পর ১৯৯০ সালের শেষ দিক থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন বিএনপি সরকারের পুরো সময়টাই কারাগারে আটক ছিলেন এরশাদ। তাঁর আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম জানান, ওই সময়ে (১৯৯১-৯৬) এরশাদের বিরুদ্ধে ৪৩টি মামলার মামলা হয়। পরে অধিকাংশ মামলায় এরশাদ বেকসুর খালাস পেয়েছেন। বর্তমানে মঞ্জুর হত্যা ও রাডার ক্রয়-সংক্রান্ত মামলা বিচারাধীন আছে।
মঞ্জুর হত্যা মামলাটি বিচারে যাওয়ার পর দুই আসামি আবদুল লতিফ ও শামসুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মামলটির ওপর স্থগিতাদেশ দেন। এরপর তৎকালীন বিএনপি সরকারের আমলে বিচারকাজ আর এগোয়নি।
এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের বর্তমান কৌঁসুলি আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর মামলাটি বিচারের নিষ্পত্তির জন্য প্রথম উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মামলাটির কার্যক্রম থেমে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠন করার পর মামলার গতি আসে।
তবে বাস্তবতা হলো, মঞ্জুর হত্যা মামলাটি ১৯৯৬ সালের পর থেকে দীর্ঘদিন ঝুলে ছিল। গত বছরের মাঝামাঝি এসে মামলাটির বিচারকাজ হঠাৎ গতি পায়। তখন ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক হয়েও এরশাদ সরকারের কঠোর সমালোচনা করতে থাকেন। তখন মামলার বিচারক পরিবর্তন হয়।
জাতীয় পার্টির সূত্রগুলোর দবি, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকারি দলের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া না-দেওয়াকে কেন্দ্র আওয়ামী লীগের সঙ্গে এরশাদের তখন বনিবনা হচ্ছিল না। ওই অবস্থায় মঞ্জুর হত্যা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাকে এরশাদের পক্ষে জেরা করার জন্য ১৮ জুলাই তারিখ ধার্য হয়। অবশ্য শেষ মুহূর্তে ৬ জুলাইয়ের গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে সমর্থন দেন এরশাদ।
এরপর ১৮ জুলাই মঞ্জুর হত্যা মামলায় এরশাদ সময়ের আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন শুনানি হয়নি। আদালত শুনানির জন্য ২৯ আগস্ট পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। একইভাবে পরবর্তী তারিখেও এরশাদের পক্ষে সময়ের আবেদন করেন এবং তা গৃহীত হয়। এরপর কিছুদিন মামলাটি ধীরগতিতে চলে।
অক্টোবর থেকে সরকারের সমালোচনায় এরশাদ বেশ সরব হয়ে ওঠেন। তিনি সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো একতরফা নির্বাচনে যাবেন না বলেও ঘোষণা দেন। তিনি তখন আওয়ামী লীগকে ‘সবচেয়ে ধিকৃত’ দল বলেও মন্তব্য করেন।
এরশাদ ১১ নভেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচনে গেলে মানুষ তাঁকে থুতু দেবে। এর চেয়ে জেলেই মরে যাওয়া ভালো।’ তিনি তখন ‘সর্বদলীয় সরকার’কে অসাংবিধানিক বলেও আখ্যায়িত করেন।
এর মধ্যে মঞ্জুর হত্যা মামলাটিও গতি পায়। ২০ নভেম্বর আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের তারিখ ধার্য হয়। এর আগে ১৮ নভেম্বর হঠাৎ এরশাদ বোল পাল্টান। তিনি ওই দিন সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন। বলেন, ‘নির্বাচনে না গেলে মানুষ থুতু দেবে। শুধু আমাকে নয়, সব রাজনীতিককেই জনগণ থুতু দেবে।’ এমনকি তাঁর দল জাতীয় পার্টি নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারে যোগ দেয়।
এরই মধ্যে ২০ নভেম্বর আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। আদালত ২৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ ধার্য করেন।
২৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক শেষ করে এবং রায়ের দিন ধার্য করার আবেদন করে। তবে আদালত ওই দিন ‘রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়নি’ মর্মে ২২ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। এর ফলে মামলাটির কার্যক্রম দুই মাস পিছিয়ে যায়।
২৪ নভেম্বর আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তিনি ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি উপস্থাপন শেষ করেন এবং রায়ের দিন ধার্য করার জন্য আদালতের কাছে মৌখিক আবেদন করেন। কিন্তু আদালত যুক্তিতর্কের বিষয়ে অধিকতর শুনানির জন্য ২২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন। আদালত কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন, তা তিনি বলতে পারছেন না।
২৬ নভেম্বর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে এরশাদ ও তাঁর দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। এক দিন পর ৩ ডিসেম্বর এরশাদ আবার সিদ্ধান্ত পাল্টিয়ে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এরপর দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না দিতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি, মন্ত্রিসভা থেকে তাঁর দলের নেতাদের পদত্যাগ করাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। একপর্যায়ে তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি সেখান থেকে মুখপাত্রের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তাঁকে জোর করে আটকে রাখা হয়েছে। তাঁর অনুপস্থিতিতেই তিনিসহ দলের ৩৪ জন নির্বাচিত হন। এরপর ৯ জানুয়ারি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে যাননি তিনি।
এরই মধ্যে ২২ জানুয়ারির মঞ্জুর হত্যা মামলার তারিখও ঘনিয়ে আসে। ১১ জানুয়ারি এরশাদ সিএমএইচ থেকে সংসদ ভবনে এসে শপথ নিয়ে আবার হাসপাতালে ফিরে যান। সেখান থেকে ১২ জানুয়ারি বঙ্গভবনে মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং প্রধানমন্ত্রী বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ পেয়ে নিজ বাসায় ফিরে আসেন।
জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র জানায়, ২২ জানুয়ারির মামলার তারিখ নিয়ে তখন বেশ দুশ্চিন্তায় ছিলেন এরশাদ। তিনি ১৪ জানুয়ারি তাঁকে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় বিশেষ দূত নিয়োগ এবং তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করায় প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে একটি চিঠি দেন।
এরপর ২২ জানুয়ারি আদালত মঞ্জুর হত্যা মামলার রায়ের তারিখ ধার্য করেন ১০ ফেব্রুয়ারি। ২৩ জানুয়ারি এরশাদ একটি বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘তিক্ত অভিজ্ঞতাকে মুছে ফেলে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী আমার ওপর একটি গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছেন। তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই।’ প্রধানমন্ত্রী যে তাঁকে ‘সহযাত্রী রূপে’ নিয়েছেন, তার মর্যাদা রক্ষায় সদা সচেষ্ট থাকারও অঙ্গীকার করেন এরশাদ। সর্বশেষ ৪ ফেব্রুয়ারি এরশাদ আরেকটি বিবৃতি দেন। তাতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সেনানিবাস প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
অবশ্য এর আগেই ২৯ জানুয়ারি মঞ্জুর হত্যা মামলার বিচারক পরিবর্তন হয়। তা গতকাল বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়।
মঞ্জুর হত্যা মামলার রায়ের ধার্য তারিখের আগ দিয়ে বিচারক পরিবর্তনের কারণ জানতে চাইলে আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বিচারিক কাজের সুবিধার্থে সাতজন অতিরিক্ত জেলা জজের আদালত পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মধ্যে এই মামলার বিচারকও রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছেন, নতুন বিচারক নতুন করে মামলার যুক্তিতর্ক শুনতে চাইতে পারেন। তাই ১০ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার সম্ভাবনা নেই।
এ অবস্থায় বিচার কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে এসেও মঞ্জুর হত্যা মামলাটি আবার রাজনীতির চক্করে পড়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো মনে করছেন।