'তিন প্রজন্মকে আমরা এক সাথে হারিয়েছি'

এক ফ্রেমে শুক্লা বীর তাঁর মেয়ে ত্রিতপা তরফদার প্রত্যাশা ও শুক্লার মা জ্যোৎস্না রানী। তিনটি প্রাণই চলে গেছে গতকালের সড়ক দুর্ঘটনায়। ছবি: সংগৃহীত
এক ফ্রেমে শুক্লা বীর তাঁর মেয়ে ত্রিতপা তরফদার প্রত্যাশা ও শুক্লার মা জ্যোৎস্না রানী। তিনটি প্রাণই চলে গেছে গতকালের সড়ক দুর্ঘটনায়। ছবি: সংগৃহীত

তপন তরফদারের সঙ্গে শুক্লার বিয়ে হয়েছিল চার বছর আগে। শুক্লা চাকরি করতেন বেসরকারি সংগঠন ব্র্যাকের হবিগঞ্জ শাখায়। বিয়ের পর বদলি হয়ে এসছিলেন শ্রীমঙ্গল। তিন মাস আগে আবার বদলি হয়েছিলেন গোয়াইনঘাট।

অফিস বন্ধ থাকায় গত শুক্রবার শ্রীমঙ্গলে নিজ বাড়িতে এসেছিলেন শুক্লা। আর সেখান থেকে ফেরার পথে গতকাল শনিবার সিলেটের জৈন্তাপুরের দরবস্ত এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় শুক্লা, তাঁর মা ও একমাত্র কন্যাসন্তানের।

স্ত্রী, সন্তান আর শাশুড়িকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ হয়ে গেছেন শুক্লার স্বামী তপন তরফদার। বলছিলেন, ‘কাল ছিল পৌষসংক্রান্তি। পৌষসংক্রান্তিতে সরকারি ছুটি না থাকায় আর মধ্যে শুক্রবার থাকায় মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসে শুক্লা। যাওয়ার পথে মেয়ে ও মাকে নিয়ে যাচ্ছিল। তিন প্রজন্মকে আমরা এক সাথে হারিয়েছি।’

এই দুর্ঘটনার ব্যাপারে কোনো মামলা করবেন কি না, জানতে চাইলে তপন বলছিলেন, ‘যাদের হারিয়েছি, তাদের তো ফিরে পাওয়া যাবে না। আর মামলা করে কী হবে। এটুকু বলি, যে কারণে আমি আমার স্ত্রী, মেয়ে ও শাশুড়িকে হারিয়েছি এমন ঘটনা যেন আর না হয়।’

গতকাল শনিবার সিলেট-তামাবিল সড়কের জৈন্তাপুরে রাস্তার পাশে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি বহনকারী একটি ট্রাককে যাত্রীবাহী একটি বাস আঘাত করলে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। তাঁরা হলেন ব্র্যাকের গোয়াইনঘাট শাখার ফিল্ড অফিসার শুক্লা বীর (৩১), কন্যাসন্তান ত্রিতপা তরফদার প্রত্যাশা (১৪ মাস) ও শুক্লা বীরের মা জোৎস্না রানী।

আজ রোববার সকাল সাড়ে আটটার দিকে শ্রীমঙ্গলে শুক্লা বীর ও মেয়ে ত্রিতপা তরফদারের দাহ করা হয়।

আর জোৎস্না রানীর মৃতদেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয় হবিগঞ্জ সদরের এবদারপুর থানায়। সেখানে আজ তাঁর দাহ করা হয়।