খুলনায় দুটি পাটকল চালু

দীর্ঘ ১৯ দিন ধরে বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত দুটি পাটকল। মিল দুটি হলো দৌলতপুর জুট মিল ও খালিশপুর জুট মিল। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা নগরের খালিশপুর এলাকার দৌলতপুর জুট মিল ও দুপুর ২টার দিকে খালিশপুর জুট মিল চালু হয়।

ওই দুটি জুট মিলের শ্রমিকদের দুই সপ্তাহের মজুরি পরিশোধ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে আরও এক সপ্তাহের মজুরি পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন মিল দুটির প্রকল্প পরিচালকেরা। মিল দুটি শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করে ‘নো ওয়ার্ক নো পে’ ভিত্তিতে।

খালিশপুর জুট মিলে রয়েছে তিনটি ইউনিট। ওই মিলে শ্রমিক কাজ করে সাড়ে তিন হাজারের মতো। কিন্তু প্রথম দিন হাজির হয়েছেন মাত্র এক হাজার জনের মতো শ্রমিক। তবে ওই শ্রমিক দিয়ে তিনটি ইউনিটই চালু করেছে মিল কর্তৃপক্ষ। মিলটিতে শ্রমিকদের পাঁচ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া ছিল।

ওই মিলের প্রকল্প পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিন শ্রমিক অনেক কম এসেছে। কিন্তু তারপরও মিল চালু করা গেছে এটাই বড় কথা। শনিবার পুরো শ্রমিক পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

খালিশপুর জুট মিল চালুর পর দৌলতপুর জুট মিল চালুর উদ্যোগ নেয় মিল কর্তৃপক্ষ। দুপুর ২টার দিকে অল্প কিছু শ্রমিক নিয়ে মিলটি চালু করা সম্ভব হয়। পরে ধীরে ধীরে মিলে শ্রমিকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। ছোট ওই মিলে রয়েছে মাত্র একটি ইউনিট। শ্রমিক কাজ করে ৬০০ জনের মতো। প্রথম দিন দেড় শ জনের মতো শ্রমিক দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। মিলটিতে শ্রমিকদের তিন সপ্তাহের মজুরি বকেয়া ছিল।

ওই মিলের প্রকল্প পরিচালক মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মিল বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শ্রমিকেরা খুলনা ছেড়ে চলে গেছেন। এ কারণে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। তবে শনিবার নাগাদ পুরো শ্রমিক পাওয়া যাবে।

খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলেই শ্রমিকদের মজুরি বকেয়া আছে চার থেকে ১২ সপ্তাহের। আর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন বকেয়া আছে তিন থেকে পাঁচ মাসের। তাই বকেয়া মজুরির দাবিতে গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে ধর্মঘট করছিল ৮টি পাটকলের শ্রমিকেরা। শুধু যশোর এলাকার কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকেরা ওই মিলের উৎপাদন অব্যাহত রেখেছিলেন। আজ বুধবার দুটি চালু হওয়ার ফলে খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকলের মধ্যে তিনটির উৎপাদন অব্যাহত থাকল।

বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) তথ্যানুযায়ী খুলনাঞ্চলের ৯টি পাটকল বন্ধ থাকলে প্রতিদিন উৎপাদন ক্ষতি হয় ২১৩ মেট্রিকটন পাটপণ্য।

বিজেএমসি’র মহাব্যবস্থাপক ও খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর সমন্বয়ক গাজী শাহাদত হোসেন বলেন, দুটি পাটকল শ্রমিকদের দুই সপ্তাহের মজুরি দিয়ে মিল চালু করতে পেরেছে। আগামী সপ্তাহে আরও এক সপ্তাহের মজুরি পরিশোধ করবে মিল দুটি।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, যেহেতু দুটি মিল চালু করা গেছে সেহেতু আগামী সপ্তাহের মধ্যে অন্য মিলগুলোও চালু করা সম্ভব হবে।