ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নিপীড়ন ও প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করে রাখার পৃথক ঘটনায় দুটি তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একটি তদন্ত কমিটিকে প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং কলাপসিবল গেট ভাঙার কারণ খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। অন্যটি ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর হাতে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা তদন্তের জন্য করা হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী, এই কমিটিতে কোনো শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রাখা হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান তদন্ত কমিটি করার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। গতকাল দুপুরে ছাত্রলীগের আট নেতাকে বহিষ্কারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে শুরু হয়ে কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, কার্জন হল হয়ে মোকাররম ভবনে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিল শেষে সমাপনী বক্তব্যে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিসহ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি করার সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখনো আমাদের কাউকে ডাকেনি। যদি দাবি মানা না হয়, তবে আমরা আগামী মঙ্গলবার থেকে লাগাতার কর্মসূচিতে যাব।’

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে করা তদন্ত কমিটিতে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ জিনাত হুদাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী প্রতিনিধির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মতান্ত্রিক কাঠামোতে এ ধরনের কোনো প্রতিনিধি রাখার সুযোগ নেই।

এদিকে নিপীড়নের বিচার চাইতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় আরেকটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে সহকারী প্রক্টর মো. মাকসুদুর রহমানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে সোমবার বিকেলে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানের সময় ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল শাখার নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রদের হুমকি-ধমকি এবং ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও গালিগালাজ করেন।

প্রতিবাদে গত বুধবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর ব্যানারে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের কার্যালয় ঘেরাও করেন। এ সময় তাঁরা প্রক্টরের কার্যালয়ের দুই পাশের কলাপসিবল গেট ভেঙে অবস্থান নেন। প্রক্টরকে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা তাঁর কার্যালয়ে আটকে রাখেন। পরে উপাচার্যকে তদন্ত কমিটি করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে (রোববার) প্রতিবেদন প্রকাশ করার সময় বেঁধে দেন।