এটাও একটা সেতু

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আয়নাবাজ-বহরমপুর সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আয়নাবাজ-বহরমপুর সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি তোলা ছবি l প্রথম আলো

পটুয়াখালীর বাউফল ও দশমিনা উপজেলা সীমান্তের কালাইয়া-দশমিনা খালের ওপর নির্মিত আয়নাবাজ-বহরমপুর সেতুটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ওই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন দুটি বিদ্যালয়ের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীসহ কয়েক শ মানুষ ঝুঁকির মধ্যে যাতায়াত করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুটির পূর্ব পাশে বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের আয়নাবাজ গ্রাম এবং পশ্চিম পাশে দশমিনা উপজেলার বহরমপুর গ্রাম। সেতুসংলগ্ন পশ্চিম পাশে উত্তর বহরমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেতুটির দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাটি সরে গেছে, স্লাবের ঢালাই খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে। সেখানে গাছের টুকরা বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। রেলিং ভেঙে গেছে। সেতুটির নিচের অংশের লোহার বিম ও খাম্বা বেঁকে রয়েছে। এ কারণে সেতুটির মাঝখানও বেঁকে রয়েছে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে মানুষ চলাচল করছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৯৩-৯৪ সালে কালাইয়া-দশমিনা খালের ওপর আয়নাবাজ-বহরমপুর লোহার সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তবে কোন দপ্তর সেতুটি নির্মাণ করেছে, তা তাঁরা জানেন না।

স্থানীয় ভুক্তভোগী কয়েকজন বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় পাঁচ বছর ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাঁচ বছর পর্যন্ত উত্তর বহরমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইদ্রিছিয়া দাখিল মাদ্রাসার পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থীসহ প্রতিদিন দুই গ্রামের কয়েক শ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করছে, অথচ তা দেখার কেউ নেই।

উত্তর বহরমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তামান্না বেগমের (৯) সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তার বাড়ি বাউফলের আয়নাবাজ গ্রামে। এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পার হয়ে তাকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়।

একই বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মতিয়ার রহমান বলেন, সেতু ধসে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এর আগেই সেতুটি নির্মাণ করা প্রয়োজন।
কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. ফয়সাল আহম্মেদ মোল্লা বলেন, কোন উপজেলায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সেতুটি বর্তমানে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। আর ওই সেতুটি দিয়েই দুই উপজেলার আয়নাবাজ ও উত্তর বহরমপুর গ্রামের শিক্ষার্থীসহ কয়েকশ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করে। সেতুটি শিগগিরই পরিত্যক্ত ঘোষণা করে নতুন সেতু নির্মাণ করা দরকার।

বাউফল উপজেলা প্রকৌশলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে, যাতে কম সময়ের মধ্যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। একই ধরনের কথা বললেন দশমিনা উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর আলম।