পাঠক প্রতিক্রিয়া: উচ্চশব্দ বন্ধে '৯৯৯' সমাধান

গভীর রাতে ছাদে উচ্চ শব্দে গান বাজানোর প্রতিবাদ করায় প্রাণ গেল প্রবীণ নাজমুল হকের। এর পরিপ্রেক্ষিতে গভীর রাতে পাড়া-মহল্লার মাইক-সাউন্ড বক্সের এই উচ্চ শব্দ থামানোর উপায় জানতে চেয়ে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে পোস্ট করা হয়।

পোস্টটির নিচের প্রায় প্রতিটি মন্তব্যেই ঝড়ে পড়ে ক্ষোভ, বিরক্তি আর অভিযোগ। অধিকাংশ পাঠকই তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। যারা এসব করে বেড়ান, তাদের পাড়া প্রতিবেশীর শান্তি নষ্টকারী হিসেবে অবিহিত করে উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন এবং এর সুষ্ঠু সমাধান চান। অনেকের মত, বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে অনেক তরুণ এ কাজ করে থাকেন। সে ক্ষেত্রে তা বন্ধ করতে বা সহনীয় পর্যায়ে রাখতে অভিভাবক ও এলাকার মুরুব্বিদের দায়িত্বটা বেশি।

শাহাদাত শাকিল, নাদিম খান উচ্চ স্বরে গান বাজানোর জন্য অভিযুক্ত শব্দ দখলকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ জন্য ডিএমপি কমিশনারকে ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান।

দিদার আলম অভিযোগ করেন যে তার জানালার পাশে প্রায়ই উচ্চশব্দে গান-বাজনা হয় কিন্তু তাঁর সহ্য করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।

হাবিব শাহিন এটিকে মূল্যবোধের অবক্ষয় হিসেবে আখ্যায়িত করে লেখেন, ‘এ থেকে পরিত্রাণের সংক্ষিপ্ত উপায় নাই। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করুণ, সব ঠিক হয়ে যাবে।’

এম এইচ মারুফ বেশ বিশ্লেষণাত্মক মন্তব্য করেছেন। লেখেন, ‘এ ব্যাপারে সমাজের প্রবীণ ব্যক্তিবর্গের ভূমিকা গ্রহণযোগ্য। কেননা প্রবীণ ব্যক্তিগণ তরুণদের সচেতন করবেন। এবং তাদের নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা দেবেন। গভীর রাতে যেন কেউ কোনো ধরনের অনৈতিক কাজ না করতে পারে, সে জন্য তরুণদের উদ্বুদ্ধ করবেন। এ ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। পারিবারিক অনুশাসনের মধ্যে তরুণদের ইতিহাস-সংস্কৃতির শিক্ষা দিতে হবে। তাহলে দেশের অবস্থা, সমাজের অবস্থা পরিবর্তিত হবে বলে মনে করি।’

এস এম হাসান মাহমুদ নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে একটি ইতিবাচক মন্তব্য করেন। লেখেন, ‘ইতিমধ্যে আমাদের কুষ্টিয়ায় খাজানগরে সমাজের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ এটি বন্ধ করেছেন, আমরা এখন শান্তিতে বসবাস করতে পারছি। ধন্যবাদ জানাই আমাদের সমাজ প্রধানদের।’

শুভ্র রায় কোনোরকম বাগবিতণ্ডায় না গিয়ে শব্দ দূষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ঠান্ডা মাথায় বোঝাতে চান। তাঁর মতে, সাউন্ড বক্সের শব্দের মাত্রা ঠিক করে দিলে আর কতক্ষণ বাজাবে সেটা ঠিক করে দিলে তরুণেরা নিশ্চয়ই বুঝবে।

ফরহাদ বিন মাজহার লেখেন, ‘৯৯৯ ই থামাতে পারে শব্দ দূষণ সৃষ্টিকারী এই তরুণদের। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনি একবার কল দিয়ে দেখুন এই নম্বরে, আপনার যেকোনো বিপদ আপদে।’

টিপু ওয়াসিউদ্দিন লেখেন, ‘গণ উপদ্রব নিরোধ আইন নামের একটা আইন আছে, আইনটা প্রয়োগ করতে গেলে একজন প্রতিবেশীকেই বাদী হতে হয়। মুশকিল হলো কোনো নিরীহ ব্যক্তিই প্রতিবেশীর সঙ্গে আইনি জটিলতায় জড়াতে চান না, কারণ তিনি জানেন যে ভবিষ্যতে সেই বিবাদী ব্যক্তিও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ খুঁজবে। কাজেই ওই আইনের সংস্কার করা উচিত।’

হোসেইন রায়হান স্রোতের প্রতিকূলে মন্তব্য করে বেশ বিপাকে পড়ে গেলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘এই সব সো কলড মুরব্বিরাও একটি সমস্যার নাম। আরে বাবা বিয়ের একদিন গান বাজালে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়, বিয়ে তো আর প্রতিদিন হয় না। খোঁজ নিয়ে দেখেন এই লোকটার নিজের ছেলে মেয়ের বিয়েতে ঠিকই গান বাজিয়েছে। এত অধৈর্য আর অসহনশীল হলে তো সমাজে বসবাস করতে পারবেন না।’

সীমান্তিকা সুহাসীনি জবাবে লেখেন, ‘অতিমাত্রায় সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার না করে সহনীয় মাত্রায় করলেই তো হয়।’

কাজী তুষার হোসেইন রায়হানের কাছে জানতে চান, ‘মানুষকে কষ্ট দিয়ে কিসের আনন্দ?’

মনির হোসেন লেখেন যে হোসেইন রায়হান যখন অসুস্থ হবেন ঠিক তখন যদি তার কানের কাছে এই ভাবে জোরে সাউন্ড দিয়ে ডিজে বাজানো হয় তখন তিনি বুঝতে পারবেন, কতটা খারাপ লাগে।