মিয়ানমারের চাইতে হাজার গুণে ভালো আছি

প্রথম আলোর ফাইল ছবি
প্রথম আলোর ফাইল ছবি

কেমন আছেন-জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াং হি লির প্রশ্ন ছিল টেকনাফের দমদমিয়া এলাকার অস্থায়ী রোহিঙ্গা শিবিরের দুই বাসিন্দার কাছে। দোভাষীর মাধ্যমে খলিলুর রহমান ও জোবেদা খাতুন জানান, ‘মিয়ানমারের চাইতে হাজার গুণে ভালো আছি। ওই দেশের (মিয়ানমার) সঙ্গে এ দেশের (বাংলাদেশের) তুলনা করা যায় না।’

গতকাল শনিবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফের দমদমিয়া এলাকার অস্থায়ী রোহিঙ্গা শিবিরে যান ইয়াং হি লি। সেখানে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ছিলেন তিনি। এই শিবিরে প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গা পরিবার থাকে। সেখানে ১০ জনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মিয়ানমারের মংডু শহরের মংনিপাড়ার বাসিন্দা খলিলুর রহমান ও সুধাপাড়ার গৃহিণী জোবেদা খাতুন। তাঁরা দুজন ইয়াং হি লিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং রাখাইন রাজ্যের উগ্রপন্থী যুবকদের চালানো বীভৎস নির্যাতনের বর্ণনা দেন। ধৈর্য ধরে দুজনের কথা শোনেন ইয়াং হি লি। পরে তাঁরা কথোপকথনের বিবরণ দেন প্রথম আলোকে।

দমদমিয়ার অস্থায়ী শিবিরে জাতিসংঘের মানবাধিকার-বিষয়ক বিশেষ দূতের সঙ্গে ছিলেন আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) কর্মকর্তা, রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে নিয়োজিত আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থার কর্মকর্তারা এবং টেকনাফে নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ইনচার্জ (দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মো. সাইফুল ইসলাম।

বিশেষ দূতের সঙ্গে থাকা একজন কর্মকর্তা বলেন, অন্য রোহিঙ্গারা তাঁকে বলেছে রোহিঙ্গারা যাতে দেশ ছাড়ে সে জন্য যত ধরনের নিযার্তন আছে তার সবই করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর রোহিঙ্গারা খাদ্য, বস্ত্র ও আশ্রয় পেয়েছে। মিয়ানমারে তাদের জীবন নিরাপদ নয়। নাগরিকত্ব ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করলে ফিরে যাওয়ার কথা চিন্তা করা যাবে। রাখাইনে ফিরে গিয়ে নির্যাতনের মুখে পড়তে চায় না তারা।

দমদমিয়ার অস্থায়ী শিবির পরিদর্শনের পর জাতিসংঘের বিশেষ দূত যান টেকনাফের নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শিবিরে। এখানে তিনি কিছুক্ষণ সময় কাটান। পরে বিকেলে তিনি উপজেলার হোয়াইক্যং পুটিবনিয়া রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি শিবিরের দলনেতাসহ (মাঝি) ১৬ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন বলে জানান নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম।