আ.লীগ-সমর্থিত প্রার্থী চুরি মামলার আসামি

নরসিংদীর বেলাব উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী আট প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমর্থন পাওয়া প্রার্থীসহ চারজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা আছে বা ছিল। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সমশের জামান ভূঞা চুরি ও মারামারির অভিযোগে দায়ের হওয়া দুটি মামলার আসামি। আর বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সভাপতি অলিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল মারামারি ও বিধিবহির্ভূতভাবে ইট পোড়ানোর অভিযোগে। তবে অলিউর রহমান উভয় মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা প্রার্থীদের হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ ছাড়া চেয়াম্যান পদের প্রার্থী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম নির্বাচনী বিধিমালা ভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগে দায়ের হওয়া দুটি মামলার আসামি। এর মধ্যে নির্বাচনী আইনের মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত গোলাম ফরিদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা, মারামারি ও চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুটি মামলা ছিল। উভয় মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন।
তবে অপর চার চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলার পাটুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল্লাহ, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব, উপজেলা জাতীয় পাটির সভাপতি শাহ এহসানুল করিম ও সিপিবির নেতা জাহানুল হকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই বা ছিল না।
গত মঙ্গলবার সরেজমিন বেলাব উপজেলার নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই উপজেলায় নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়। বিশেষ করে চেয়ারম্যান পদে ১৯ জনসহ মোট ৩১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করায় শুরু থেকেই আলোচনায় ছিল উপজেলাটি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আহসান হাবিব (সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত) বাদে বিএনপির অন্য প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে এরই মধ্যে অলিউর রহমানের পক্ষে প্রচারণায়ও নেমেছেন। তবে নির্বাচনে রয়ে গেছেন ক্ষমতাসীন দলের চার প্রার্থী। এর মধ্যে দুজন দল-সমর্থিত প্রার্থী সমশের জামানের বিরুদ্ধে অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে দলীয় সমর্থন আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন। এই অবস্থায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে থাকলেও অস্থিরতায় সময় কাটছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের।
চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগের দুই নেতা নজরুল ইসলাম ও গোলাম ফরিদের অভিযোগ, দলের সমর্থন পাওয়া প্রার্থী সমশের জামান কোনো কোনো ডেলিগেটের বাসায় তাঁর ইটভাটার ইট পাঠিয়ে আবার কাউকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছেন। এ কারণে দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়ে গেছেন।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে সমশের জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যাঁরা দলীয় সমর্থন আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তাঁরাই এখন আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’
নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ছয়জন। তাঁরা হলেন: বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. খসরু, ইমদাদুল হক, বিপ্লব হোসেন, মো. রফিক, মো. আবু হানিফ ও শাহজাহান মিয়া। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শারমিন আক্তার, শিউলী বেগম ও হালেমা আক্তার। ১৯ ফেব্রুয়ারি এই উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে।