এক যুগ পর তিনি 'উড়ে' এলেন

বরগুনা-২ আসনের সাবেক সাংসদ নূরুল ইসলাম গতকাল হেলিকপ্টারে করে পাথরঘাটায় আসেন l ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
বরগুনা-২ আসনের সাবেক সাংসদ নূরুল ইসলাম গতকাল হেলিকপ্টারে করে পাথরঘাটায় আসেন l ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

বরগুনা-২ আসনের সাবেক সাংসদ নূরুল ইসলাম ওরফে মণি প্রায় এক যুগ পর বরগুনার পাথরঘাটায় উড়ে এলেন। তবে তাঁর ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহজাহানের লাশ এসেছে গাড়িতে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তিনি হেলিকপ্টারে করে আসেন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় সাবেক সাংসদ নূরুল ইসলাম পালিয়ে যান। এরপর এবারই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পাথরঘাটায় এলেন। 

রফিকুল ইসলাম (৬০) গত বৃহস্পতিবার বেলা 1১টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। রফিকুল সাবেক সাংসদ নূরুল ইসলামের ছোট ভাই ও মৃত মাজাহার উদ্দিনের ছেলে।
নূরুল ইসলামের নামে ওয়ান-ইলেভেনের সময় টিন আত্মসাতের দুটি মামলা হয়। ওই মামলার একটিতে তাঁর ১৪ বছর কারাদণ্ড হয়। কিছু দিন সাজা ভোগ করার পর এ মামলা থেকে তিনি খালাস পান। অপর মামলাটি হাইকোর্টে স্থগিতাদেশ থাকায় তিনি জামিনে রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেল ৪২৯ নামের একটি বেসরকারি হেলিকপ্টারে রাজধানী ঢাকা থেকে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়ার মানিকখালী গ্রামে গতকাল বেলা ১১টার দিকে হেলিকপ্টারে করে তিনি আসেন। ওয়ান-ইলেভেনের প্রায় এক যুগ পর তাঁর ভাই রফিকুলের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি নিজ বাড়িতে এলেন।
তবে ছোট ভাই রফিকুল ইসলামের জানাজার আগে সবার উদ্দেশে নূরুল ইসলাম, বরগুনা-২ আসনের সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান ও বরগুনা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহাবুবুল আলম মোল্লা বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, বরগুনা পৌরসভার মেয়র শাহাদাৎ হোসেন, পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পাথরঘাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন, সভাপতি আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাবির হোসেন, পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম মতিউর রহমান মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক প্রমুখ।
জানাজার আগে নূরুল ইসলাম তাঁর বাবার নামের কলেজ দেখিয়ে বলেন, ‘এই কলেজে সরকারি টিন দেওয়ায় আমার নামে টিনের মামলা দেওয়া হয়েছে। সেই টিনের মামলার জন্য আমাকে ১২ বছর পাথরঘাটায় আসতে দেওয়া হয়নি। মিথ্যা কথা বলে আমার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।’
ওই সভায় শওকত হাচানুর রহমান বলেন, ‘আমি এখানে রাজনৈতিক কোনো বক্তব্য দেব না। তবে আঙ্কেল (সাংসদ নূরুল ইসলাম) কিছু রাজনৈতিক কথা বলায় আমারও দু-একটি কথা বলতে হয়। তা হলো আমার আমলে একটি লোকও বলতে পারবে না যে রাজনৈতিক মামলা দিয়ে আমি হয়রানি করেছি। বলতে পারলে আমি বিচার মাথা পেতে নেব।’
পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে রফিকুল ইসলামের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ওই জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। দাফন শেষে নূরুল ইসলাম তাঁর বাড়ির মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। পরে বেলা দুইটার দিকে আবারও তিনি হেলিকপ্টারে করে পাথরঘাটা ত্যাগ করেন।