আসামিরা নিজেদের নির্দোষ বললেন

রূপা খাতুন। ফাইল ছবি
রূপা খাতুন। ফাইল ছবি

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে বহুজাতিক কোম্পানির কর্মী রূপা খাতুনকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন। আগামী বুধবার এ মামলার যুক্তিতর্কের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থাকা প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়ার আদালতে এ মামলার বিচার চলছে।

টাঙ্গাইলের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি এ কে এম নাছিমুল আক্তার জানান, আজ রোববার পাঁচ আসামি হাবিবুর, সফর আলী, শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীরকে হাজির করা হয়। এ সময় আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পাঠ করে শোনানো হয়। আদালত আসামিদের জিজ্ঞাসা করেন, তাঁরা দোষী না নির্দোষ। প্রত্যেক আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। আসামিরা তাঁদের পক্ষে সাফাই সাক্ষী দেবেন কি না, এ প্রসঙ্গে প্রত্যেকেই দেবেন না বলে জানান। পরে আদালত আগামী বুধবার (৩১ জানুয়ারি) যুক্তিতর্কের দিন ধার্য করেন।

৩ জানুয়ারি মামলার বাদী মধুপুরের অরণখোলা ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। ২৩ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কাইয়ুম খান সিদ্দিকীর সাক্ষী ও জেরার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ পর্ব শেষ হয়। এ মামলায় চিকিৎসক, বিচারিক হাকিমসহ ২৭ জনের সাক্ষী নিয়েছেন আদালত।

গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপা খাতুনকে চলন্ত বাসে পরিবহনশ্রমিকেরা ধর্ষণ করেন। পরে তাঁকে হত্যা করে টাঙ্গাইলের মধুপুর বন এলাকায় ফেলে রেখে যায়। পুলিশ ওই রাতেই তাঁর লাশ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে পরদিন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন।
রূপার ভাই ২৮ আগস্ট মধুপুর থানায় এসে লাশের ছবি দেখে রূপাকে শনাক্ত করেন। পরে পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক হাবিবুর (৪৫), সুপারভাইজার সফর আলী (৫৫) এবং সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীরকে (১৯) গ্রেপ্তার করে। পুলিশের কাছে তাঁরা রূপাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেন। ২৯ আগস্ট বাসের তিন সহকারী শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর এবং ৩০ আগস্ট চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁরা সবাই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন। ৩১ আগস্ট রূপার লাশ উত্তোলন করে তাঁর ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে তাঁকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নিজ গ্রাম আসানবাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।