ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সেই ৫৭ ধারাই

* বিতর্কিত ৫৭ ধারা বিলুপ্ত করা হচ্ছে।
* বিতর্কিত ধারার অপরাধগুলো ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’-এর খসড়ায়।
* প্রস্তাবিত আইনে চারটি ধারায় ৫৭ ধারার অপরাধগুলো ভাগ করে রাখা হয়েছে।
* আজ অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে’র খসড়া ওঠার কথা।
* ‘সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন-২০১৮’-এর খসড়াও মন্ত্রিসভায় ওঠার কথা।

আজ সোমবার অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে’র খসড়া ওঠার কথা রয়েছে।
আজ সোমবার অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে’র খসড়া ওঠার কথা রয়েছে।

সমালোচনার মুখে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বিলুপ্ত করা হচ্ছে। কিন্তু বিতর্কিত ওই ধারার অপরাধগুলো ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’–এর খসড়ায় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে চারটি ধারায় ৫৭ ধারার অপরাধগুলো ভাগ করে রাখা হয়েছে।

আজ সোমবার অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে’র খসড়া ওঠার কথা রয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনের সংরক্ষণের মেয়াদ আরও ২০ বছর বাড়িয়ে ‘সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধন) আইন-২০১৮’-এর খসড়াও মন্ত্রিসভায় ওঠার কথা। বিদ্যমান সংবিধানে এই মেয়াদ ১০ বছর। যা চলতি সংসদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হবে। তবে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনের পদ্ধতি ও সংখ্যা বিদ্যমান নিয়মেই থাকছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। এতে সাংবাদিকসহ অসংখ্য মানুষ হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ জন্য এই ধারাটি বাতিলের দাবি ওঠে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, আইন মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে’ খসড়ায় বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইসিটি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারা বিলুপ্ত হবে। আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে, দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন অথবা যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহলে এ কাজ অপরাধ বলে গণ্য হবে। এই অপরাধে সর্বোচ্চ ১৪ বছর ও সর্বনিম্ন ৭ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়ার বিধান আছে।

 ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় ২৫, ২৮, ২৯ এবং ৩১ ধারায় ওই অপরাধের বিষয়গুলো ভাগ করে রাখা হয়েছে। এসব ধারায় মানহানি, মিথ্যা ও অশ্লীল, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং শত্রুতা সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলার অবনতিসংক্রান্ত অপরাধগুলো রয়েছে। এতে অপরাধের ধরন অনুযায়ী শাস্তির মাত্রা কমানো হয়েছে।

 তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়াটি আজ মন্ত্রিসভায় উঠতে পারে বলে জানান। তবে এ নিয়ে বিস্তারিত বলেননি।