তেজগাঁও কলেজে ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষা হবে না?

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

নিয়োগ পরীক্ষার সময় নানা অভিযোগ থাকায় ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় তেজগাঁও কলেজ কেন্দ্রকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। নিয়োগ পরীক্ষা কীভাবে আরও সুষ্ঠুভাবে নেওয়া যায়, তা ঠিক করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি একটি কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটির প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করছে ওই কেন্দ্রে পরবর্তী সময়ে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হবে কি না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০ জানুয়ারি অগ্রণী ব্যাংকের অফিসার (ক্যাশ) পদে নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। এ সময় এক পরীক্ষার্থী একটি ইলেকট্রনিকস ডিভাইস বের করলে অন্য পরীক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করেন। পরে পরীক্ষা শেষে ওই কেন্দ্রের প্রতিবাদ করা প্রার্থীদের ওপর হামলা করা হয়। হামলায় আহত একাধিক প্রার্থী আহত হওয়ার ছবি ফেসবুকে দেন। সেখানে দেখা যায়, পরীক্ষার্থীদের শরীরে জখম হয়েছে। ওই সময় এই কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার প্রতিবাদও করেন একাধিক পরীক্ষার্থী। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের একজন সংবাদকর্মী হামলার ছবি ধারণ করতে গেলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়।

ওই কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একাধিক প্রার্থী প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষার পরে পরীক্ষার্থীদের ওপর যেভাবে রড ও লাঠি দিয়ে হামলা করা হয়েছে, তা দেখে তাঁরা আতঙ্কিত। পরবর্তী সময়ে এখানে পরীক্ষা পড়লে তাতে অংশ নেবেন কি না, তা তাঁরা ভেবে দেখবেন। তাঁরা জানান, ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির জন্য ওই কেন্দ্রে এর আগেও ডিভাইসসহ পরীক্ষার্থী ধরা পড়েন। এই কেন্দ্রে সংঘবদ্ধ চক্র থাকতে পারে, যারা এসব ডিজিটাল ডিভাইস সরবরাহ করে। তাই এই কেন্দ্রে পরীক্ষা না নেওয়ার পরামর্শ তাঁদের।

ব্যাংকের নিয়োগসংক্রান্ত বিষয় দেখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি। ওই কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, তিনিও তেজগাঁও কেন্দ্রে মারামারির খবর শুনেছেন। কিন্তু হুট করে এ কেন্দ্র বন্ধ করা যায় না। কেননা, পরীক্ষার আগে থেকে কেন্দ্র নির্ধারিত থাকে। তবে এই কেন্দ্রে ভবিষ্যতে পরীক্ষা নেওয়া হবে কি না, তা ভেবে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, এর আগে তাঁর উপস্থিতিতে ডিজিটাল ডিভাইসসহ একাধিক প্রার্থীকে হাতেনাতে ধরা হয় এই কেন্দ্র থেকে।

সম্প্রতি আট ব্যাংকের সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষায় মিরপুরের একটি কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা হয়। এ নিয়ে পরে প্রতিবাদের মুখে ওই পরীক্ষা বাতিল করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত কমিটি গঠন করে ওই পরীক্ষা কীভাবে ভালোভাবে নেওয়া যায়, তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় ওই কমিটিকে।

তেজগাঁও কেলেজ কেন্দ্রের নানা অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মূলত তেজগাঁও কলেজকে কেন্দ্র রাখার মূল কারণ হচ্ছে এটিতে অনেক পরীক্ষার্থী একসঙ্গে পরীক্ষা দিতে পারেন। এটি ফার্মগেটের মতো একটি জায়গায় হওয়ায় প্রার্থীদের যাতায়াতও সহজ হয়। তবে নানা অভিযোগ পাওয়ার পর এখন তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন, এখানে ভবিষ্যতে পরীক্ষা নেওয়া হবে কি না। ওই সদস্য বলেন, যেসব অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে সেখানে পরবর্তী সময়ে ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।