ঘুষের টাকা 'বদহজম'

>
  • প্লট বরাদ্দে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি।
  • দেনদরবার করে ১ লাখ টাকায় দফারফা।
  • প্লট বরাদ্দ মেলে।
  • কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
  • তিন মাস পর টাকা ফেরত দিতে বাধ্য।

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত মার্কেটে প্লট বরাদ্দ দিতে সহকর্মীর কাছ থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা চেয়েছিলেন। দেনদরবার করে ১ লাখ টাকায় দফারফা হয়। প্লট বরাদ্দও পান সেই সহকর্মী। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। তিন মাস পর সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হলেন ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সুপার ফসিয়ার রহমান। গত বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে টাকা ফেরত দেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ওই মার্কেটে প্লট বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় ঘুষ-দুর্নীতির বিষয়ে অনেকে জেলা প্রশাসকের কাছেও অভিযোগ করেন। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, অন্যদের সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের দুই কর্মচারীও প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন। তাঁদের একজন কার্যালয়ের অফিস সহকারী মনিরা বেগম। মনিরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্বীকার করেন, অফিস সুপার ফসিয়ারকে ১ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে তিনি প্লট বরাদ্দ পেয়েছেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ‘ফসিয়ারকে আমি এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করি। তখন তিনি ঘুষ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। পরে মনিরা লিখিতভাবে জানালে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। একপর্যায়ে ঘুষের টাকা ফেরত দিতে রাজি হন। ফসিয়ারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ফসিয়ার রহমান প্রথম আলোর কাছে প্রথমে ওই টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। পরে অবশ্য বলেন, ‘আমি টাকা নিইনি। বরাদ্দের সবকিছু উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও স্যার দেখেন। আমার বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষমতা নেই। মনিরা অফিসের একজনের কাছে ৯০ হাজার টাকা রেখে গিয়েছিল।’ টাকা না নিলে ফেরত দিলেন কেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে ফসিয়ার রহমান বলেন, ‘টাকা ফেরত না দিলে জেলে যেতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে ফেরত দিয়েছি।’

মহম্মদপুরের তৎকালীন ইউএনও রওশন ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদের আয় বৃদ্ধির জন্য মার্কেট সম্প্রসারণ করে দোকানঘরের জন্য প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। উপজেলা চেয়ারম্যান এর সভাপতি। প্লটের বরাদ্দের জন্য ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি তিনি জানেন না।

বক্তব্য জানতে উপজেলা চেয়ারম্যান খান জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোন নম্বরে বুধবার একাধিকবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।