খাসজমিতে চেয়ারম্যানের মার্কেট!

নড়াইলের কালিয়ায় খাসজমি দখল করে চেয়ারম্যানের মার্কেট। কালিয়া, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। ছবি: প্রথম আলো।
নড়াইলের কালিয়ায় খাসজমি দখল করে চেয়ারম্যানের মার্কেট। কালিয়া, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। ছবি: প্রথম আলো।

নড়াইলের কালিয়ায় খাসজমি দখল করে মার্কেট নির্মাণে বরাদ্দ দিয়েছেন কলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান। সেখানে ২০টি দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে। একটি অ্যাম্বুলেন্স কেনার কথা বলে ২০টি দোকানমালিকের কাছ থেকে জনপ্রতি এক লাখ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

চেয়ারম্যানের নেওয়া ওই টাকা ইউপির কোষাগারে জমা পড়েনি। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন তহসিলদার আনোয়ারুল ইসলাম বাদী হয়ে নড়াগাতি থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে মামলায় চেয়ারম্যানকে আসামি করা হয়নি।

অবশ্য, টাকা নিয়ে দোকান বরাদ্দের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান। তিনি বলেন, নদীর পাড়ে ইউনিয়ন পরিষদের কিছু জায়গা রয়েছে। সেখানে কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আগে থেকে খুপড়ি ঘর তুলে ব্যবসা করেন। দুই বছর আগে নদী খনন করার সময় নদীর পাড়ে মাটি ফেলার কারণে জায়গাটা বড় হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের তেমন কোনো আয়ের উৎস নেই। তাই ব্যবসায়ীদের ওই জমিতে দোকান তৈরির মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে নলীয়া নদী। নদীর পাড় দখল করে ২০টি আধা পাকা দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
দোকানিদের ভাষ্য, মাসে ১০০ টাকা ভাড়া ধরে ইউপির চেয়ারম্যান প্রতিটি দোকানির কাছ থেকে এক লাখ টাকা করে নিয়েছেন। পরে মৌখিকভাবে ঘর নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন। প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো খরচ পড়েছে।

ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রেজাউল করিম জানান, ২০টি দোকান নির্মাণ বাবদ যে টাকা নেওয়া হয়েছে, তা ইউপি তহবিলে জমা হয়নি।

কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের তহসিলদার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কলাবাড়িয়া মৌজার ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত ৪১৫১, ৪১৪৮ ও ৪৫১৩ দাগের নদী সিখস্তির প্রায় এক একর জমি দখল করে ১০ ফুট প্রশস্ত এবং ২৫ ফুট দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট প্লট তৈরি করে ২০টি দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

দোকানমালিক বরকত মোল্লা জানান, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ইউপির চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসানকে এক লাখ করে টাকা দিতে হয়েছে।

কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, খাসজমি দখল করে দোকানঘর তোলার কারণে কলাবাড়িয়া ইউনিয়নের তহসিলদার আনোয়ারুল ইসলাম বাদী হয়ে নড়াগাতি থানায় একটি মামলা করেছেন।

নড়াগাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলায়েত হোসেন মামলার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।