পাঁচ দিনে বিএনপির ৪৮০ জন গ্রেপ্তার

রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে গতকাল সকালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় যোগ দিতে আসেন নেতারা।  এ সময় তাঁদের কয়েকজনকে আটক করে সাদাপোশাকধারী পুলিশ। ছবি: প্রথম আলো
রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে গতকাল সকালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় যোগ দিতে আসেন নেতারা। এ সময় তাঁদের কয়েকজনকে আটক করে সাদাপোশাকধারী পুলিশ। ছবি: প্রথম আলো
>
  • রায় সামনে রেখে দেশব্যাপী ধরপাকড়।
  • গতকাল ঢাকায় ১৪ জন গ্রেপ্তার।
  • ঢাকার বাইরে ৩৮ জন গ্রেপ্তার।
  • ঢাকায় রিমান্ডে ১১১ জন।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা দুর্নীতির মামলার রায় সামনে রেখে দেশব্যাপী পুলিশের ধরপাকড় গতকাল শনিবারও অব্যাহত ছিল। পাঁচ দিনে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে বিএনপির ৪৮০ জন কর্মীকে গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে।

রাজধানীর পরীবাগে বিটিসিএল ভবনের কাছে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গতকাল আরও ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা সবাই বিএনপির কর্মী। এ নিয়ে রমনা ও শাহবাগ থানায় হওয়া চার মামলায় গত চার দিনে রাজধানীতে ২৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।

মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সহকারী কমিশনার শামসুল আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সকালে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল গ্রেপ্তার হওয়া চারজনকে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে পাঠায় পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে তিন মামলায় ১১১ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া গত বৃহস্পতিবার বিএনপির নেতা আমানউল্লাহসহ পাঁচজনকে গতকাল কারাগারে পাঠানো হয়।

মিছিল থেকে হামলা চালিয়ে পুলিশকে হত্যার চেষ্টা, অস্ত্র লুটের চেষ্টা, সরকারি কাজে বাধা, ভাঙচুর ও প্রিজন ভ্যানের তালা ভেঙে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় শাহবাগ ও রমনা থানায় গত মঙ্গলবার রাতে পৃথক তিনটি মামলা করে পুলিশ।

এদিকে গতকাল হোটেল লা মেরিডিয়ানে বিএনপির বৈঠক চলার সময় সেখানে যাওয়া কিছু নেতা-কর্মীকে পুলিশ আটক করে। হোটেলের সামনের রাস্তা থেকে পুলিশ তাঁদের আটক করে। তবে কতজনকে আটক করা হয়েছে, তা জানা যায়নি।

সারা দেশে ধরপাকড়

বিএনপি-জামায়াত ও দল দুটির অঙ্গসংগঠনের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গত শুক্র ও গতকাল ৩৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে প্রথম আলোনিজস্ব প্রতিবেদকপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন বিস্তারিত:

মানিকগঞ্জে অভিযান চালিয়ে বিএনপির ২৪ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হোসেন এবং সিঙ্গাইর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। মানিকগঞ্জে পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপি ও যুবদলের তিন নেতা-কর্মীকে গতকাল ভোরে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা-পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি মোবিনুর রহমান, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এবং জেলা যুবদলের সদস্য ইসমাইল হোসেন। সদর থানার পরিদর্শক আতিকুল ইসলাম জানান, নাশকতার পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে বৈঠক করা হচ্ছে— সংবাদের ভিত্তিতে পৌর এলাকার শান্তিবাগ মহল্লার মোবিনুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৩০০ গ্রাম গানপাউডারসহ তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

লালমনিরহাটে শুক্রবার গভীর রাত থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্তÍবিএনপি-জামায়াতের ছয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন হাতীবান্ধা উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি শরিফুল ইসলাম, হাতীবান্ধা আলীম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন মিয়া, হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, একই উপজেলা জামায়াতের কর্মী ও বস্ত্র ব্যবসায়ী আহাম্মদ আলী এবং লালমনিরহাট সদর উপজেলার বিএনপির কর্মী মজনু মিয়া।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় পুলিশ শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের পাঁচ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে।