'লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে'

ভার্চ্যুয়াল জগতে চলছে গ্যাং কালচারের চর্চা। গ্যাং কালচারের শিকার হয়েছিল উত্তরার ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান। তাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। উত্তরার গ্যাংগুলো ফেসবুকে হত্যা, খুনসহ নৃশংস বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে। সেই সঙ্গে দল বেঁধে মাঠে চাঁদা আদায়, ছিনতাই, মারধর করছে। এক গ্যাংয়ের ওয়াল থেকে অন্য গ্যাংকে হুমকি দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

ভয়ংকর এই প্রবণতা ঠেকানোর উপায় জানতে চাওয়া হয় পাঠকের কাছে। প্রথম আলো ফেসবুক পেজে এ-সংক্রান্ত পোস্টে মতামত জানিয়েছেন পাঠকেরা। বেশির ভাগই পরিবারের ভূমিকাকে বড় করে দেখছেন।

নাজিম উদ্দিন বলছেন, ‘পারিবারিক শিক্ষা ও মূল্যবোধ, স্কুল-কলেজে সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক, সামাজিক সচেতনতায় রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা এবং ইন্টারনেট ও বিভিন্ন অসামাজিক সাইট বন্ধসহ অপ্রাপ্তবয়স্ক স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে গ্যাং কালচার চর্চা ঠেকানো সম্ভব।’

নাজিম উদ্দিনের সঙ্গে একমত মোক্তার হোসেইন। তিনি বলছেন, ‘পরিবার ও শিক্ষকদের নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। গ্রুপিং নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে শাস্তির ব্যবস্থা রাখতে হবে। ওদের নৈতিক অবক্ষয় দিন দিন বেড়েই চলছে। লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে।’

সোলায়েম হুমায়দি কিছুটা ক্ষোভ জানিয়ে লিখেছেন, ‘এসব বন্ধ করতে হলে মা-বাবা এবং শিক্ষকদের শাসন প্রয়োজন, যা আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’

রনি রেদোয়ানের মতে, সন্তানকে বাবা-মায়ের যথেষ্ট সময় দিতে হবে। সন্তান কী করছে, কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে—এগুলোর দিকে নজর রাখলে সন্তান গ্যাং কালচারের দিকে ঝুঁকতে পারবে না।

মুক্ত হাসান কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছেন।

  • কিশোরদের জন্য নতুন আইন
  • লেখাপড়ার পাশাপাশি ধর্মীয় ও নৈতিকতার শিক্ষাদান
  • নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা
  • সরকারি ব্যয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ
  • সর্বোপরি শিক্ষক ও অভিভাবকের সচেতনতা দরকার।

ফাহিম শাহরিয়ার লিখেছেন, ‘দরকার আইনের সুশাসন। তাহলেই শুধু গ্যাং কালচার কেন, যেকোনো অপরাধ ও অপরাধী দমনে তৎপরতা বাড়বে নিঃসন্দেহে। অপরাধীদের মনে ভয়ের সঞ্চার হবে।’

সালাউদ্দিন কাদেরের মতে, যেকোনো গ্যাংয়ের প্রচারণামূলক যেকোনো পোস্ট দেখামাত্রই রিপোর্ট করতে হবে।

আবদুর রহমানের মতে, তাদের জীবনের উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত, তা বোঝাতে হবে।

সবচেয়ে কার্যকর কথা বোধ হয় আনোয়ার মাহমুদের মন্তব্যেই পাওয়া গেল। তিনি লিখেছেন, ‘যত দিন অপরাধ করে অপরাধীরা পার পেয়ে যাবে, তত দিন কোনো কিছুই ঠেকানো সম্ভব নয়!’