গোলাপি এখন উপজেলা নির্বাচনের ট্রেনে: প্রধানমন্ত্রী

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৯-দলীয় জোটের অংশগ্রহণ করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গোলাপি এখন উপজেলা নির্বাচনের ট্রেনে চড়েছেন।’

আজ শনিবার রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় চারঘাট পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য শুরু করেন। তিনি প্রায় আধ ঘণ্টা বক্তব্য দেন।


প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ধ্বংস ছাড়া বিএনপি-জামায়াত জোট আর কোনো রাজনীতি জানে না। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন,  ‘উনি ধ্বংসের রানি। দেশের মানুষের শান্তি উনার সহ্য হয় না।’ 


বক্তব্যে শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দেন। বর্ষাকালে পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রাজশাহীর মানুষকে রক্ষা করবেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য নদীতে ড্রেজিং করা হবে ও পদ্মার তিরে বাঁধ তৈরি করা হবে বলে শেখ হাসিনা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অনেক বাধা থাকলেও দেশের মানুষ ভোট দিয়ে সরকারকে নির্বাচিত করেছেন। এ জন্য তিনি  জনগণকে ধন্যবাদ জানান।


শেখ হাসিনা আরও বলেছেন,  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের  জন্ম হয়েছিল গোপালগঞ্জে। খালেদা জিয়ার সে জন্য মন খারাপ হয়। তাই গোপালগঞ্জের মানুষদের তিনি গোপালি বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি বলি গোপালিরাই কপালি হয়।’


জনসভায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, রাজশাহীর সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩১তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর সরকার দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির পাশাপাশি জনগণের প্রতি সুশীল আচরণ গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ সদস্যদের দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন নিশ্চিত করতে হবে।


পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, আপনাদের কাছে বিপদগ্রস্ত মানুষ আসে সাহায্যের আশায়। তারা যাতে অযথা কোনো হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সেবা প্রদান করতে হবে।’


প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারা দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণ, সিনেমা হল, আদালত চত্বরসহ বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যার ভয়াবহতা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রতিটি সন্ত্রাসী ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে।


শেখ হাসিনা বলেন, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধ করতে বিএনপি ও তাদের দেশি-বিদেশি প্রভু, লবিস্ট, সুবিধাভোগী গোষ্ঠী এবং পেশাদার বুদ্ধিজীবীদের নানামুখী তত্পরতা ব্যর্থ হয়েছে। জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। গণতন্ত্র ও সংবিধান সমুন্নত রেখেছে।


আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বরাদ্দ করা অর্থকে বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনার বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পুলিশের জনবল ও সরঞ্জাম বাড়ানো এবং নতুন ইউনিট সৃষ্টির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।


অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার ও একাডেমির অধ্যক্ষ নাইম আহামেদ উপস্থিত ছিলেন। ৩১তম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচের ১৭৬ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার কুচকাওয়াজে অংশ নেন।