আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন চায় সুইজারল্যান্ড

কক্সবাজারের উখিয়ায় ইউনিসেফ পরিচালিত শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে গতকাল শিশুদের মাঝে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসে।  ছবি: পিআইডি
কক্সবাজারের উখিয়ায় ইউনিসেফ পরিচালিত শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে গতকাল শিশুদের মাঝে সুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসে। ছবি: পিআইডি

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কফি আনান কমিশনের সুপারিশের পূর্ণ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের সফররত প্রেসিডেন্ট আঁলা বেরসে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজারের উখিয়ায় কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সুইস প্রেসিডেন্ট এ আহ্বান জানান।
আঁলা বেরসে বলেন, আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশের সঙ্গে সুইজারল্যান্ড কাজ করবে। তিনি মিয়ানমার থেকে আসা এসব রোহিঙ্গাকে স্বাগত জানানো এবং আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রাণপণ চেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে, তা নজিরবিহীন। এ জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা ও সম্মান পেয়েছে।
সুইস প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার ভরণ-পোষণ বাংলাদেশের একার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই রোহিঙ্গা সংকটে ত্রাণসহায়তাসহ নানা তৎপরতার মাধ্যমে সুইজারল্যান্ড সরকার আন্তরিকভাবে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সম্মানের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ওপর গুরুত্ব দেন আঁলা বেরসে। তিনি শিবিরে বসবাসরত রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের পরিস্থিতি এবং তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাদের বাড়তি নিরাপত্তার ওপর জোর দেন।
আঁলা বেরসে একটি বিশেষ বিমানযোগে ঢাকা থেকে গতকাল বেলা ১১টায় কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে তিনি কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) স্থাপিত রোহিঙ্গা ইউনিট পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রোহিঙ্গা রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং চিকিৎসাব্যবস্থার খোঁজখবর নেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সুইস প্রেসিডেন্ট উখিয়ার কুতুপালংয়ে পৌঁছে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। তিনি কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের ডি-৪ ব্লকে একটি মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা কার্যক্রম দেখেন। পরে ডি-৫ ব্লকে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। সুইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং দুই দেশের প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আইওএম, ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।