ভাঙা হাতে আদালতে যুবক, পুলিশ বলল ধস্তাধস্তি

বংশাল থানার বিস্ফোরক মামলায় নাদের নামের এই ব্যক্তিকে (দুই হাতে ব্যান্ডেজ ও প্লাস্টার) রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারের সময় তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। গতকাল বিকেলে তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়।  ছবি: হাসান রাজা
বংশাল থানার বিস্ফোরক মামলায় নাদের নামের এই ব্যক্তিকে (দুই হাতে ব্যান্ডেজ ও প্লাস্টার) রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারের সময় তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। গতকাল বিকেলে তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। ছবি: হাসান রাজা

‘পুলিশ পিটিয়ে আমার দুই হাত ভেঙে ফেলেছে। আমার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে, যা ভাষায় প্রকাশ করার নয়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’ কথাগুলো মো. নাদেরের। তাঁকে বংশাল থানার পুলিশ দুই মাস আগের বিস্ফোরক আইনের মামলায় গত মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করে গতকাল বুধবার ঢাকার আদালতে পাঠায়।

পুলিশ নাদেরের সাত দিনের রিমান্ড চাইলেও অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. ফাহাদ বিন আমিন চৌধুরী তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। রিমান্ড শুনানির জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করা হয়েছে।

নাদেরকে গতকাল বিকেলে আদালতে হাজির করেন বংশাল থানার পুলিশ কনস্টেবল মশিউর রহমান। দেখা যায়, নাদেরের দুই হাতে ব্যান্ডেজ। ডান হাতে হাতকড়া পরানো।

নাদেরের ওপর পুলিশের নির্যাতনের অভিযোগ সম্পর্কে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি হয়েছিল। তবে কে তাঁর হাত ভেঙেছে, তা তিনি বলতে পারবেন না। আদালতের কাছে নাদেরের আইনজীবী শরীফ উদ্দিন লিখিত অভিযোগ করে বলেছেন, পুলিশ নির্যাতন করে তাঁর হাত ভেঙে দিয়েছে।

মামলার এজাহারে পুলিশ বলেছে, নাদের বংশাল থানার ৩২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। তাঁর বাবার নাম জয়নুদ্দিন। তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, নাদের যুবদল করলেও এখন কোনো পদে নেই।

নাদেরকে যে মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা গত ডিসেম্বর মাসে করা। বংশাল থানার এসআই শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৩ ডিসেম্বর বংশাল থানার হাজি ওসমান রোডের রাস্তার ওপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। বিএনপির এক থেকে দেড় শ নেতা-কর্মী পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দেশে তাঁদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল, লাঠিসোঁটা ও ককটেল নিক্ষেপ করেন।

রিমান্ডের আবেদনে পুলিশ বলেছে, আসামি বর্তমানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছেন বলে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

নাদেরকে যখন আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়া হচ্ছিল তখন তিনি বলছিলেন, ‘আমি পুলিশি নির্যাতনের শিকার।’