আরও ৬ মাস প্রাণ পেল ৪ হাজার গাছ

মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশের গাছ কাটা হচ্ছে। গত ২৪ জানুয়ারি বিকেলে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার শিবপুর এলাকা থেকে ছবিটি তোলা। প্রথম আলো
মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশের গাছ কাটা হচ্ছে। গত ২৪ জানুয়ারি বিকেলে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার শিবপুর এলাকা থেকে ছবিটি তোলা। প্রথম আলো

মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে থাকা প্রায় চার হাজার গাছ কাটার ওপর ছয় মাসের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে সেখানে থাকা গাছগুলো কাটা যাবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার রুলসহ আদেশ দেন।

কাটা হচ্ছে চার হাজার গাছ’ শিরোনামে গত ২৫ জানুয়ারি প্রথম আলোতে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটি যুক্ত করে গাছ কাটার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য মো. মনজুরুল ইসলাম গতকাল সোমবার রিটটি করেন। আজ মঙ্গলবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান।

রিটের যুক্তি সম্পর্কে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, সংবিধানের ১৮ (এ) ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুসারে সরকারের দায়িত্ব পরিবেশ সংরক্ষণ করা। এ ক্ষেত্রে সড়কের পাশে ফাঁকা জায়গা সত্ত্বেও গাছগুলো সংরক্ষণ না করে সড়ক প্রশস্ত করার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, যা পরিবেশের জন্য হুমকি। এসব যুক্তিতে রিটটি করা হলে আদালত রুলসহ ওই আদেশ দেন।

রুলে মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর-হেমায়েতপুর মহাসড়কের ৩১ কিলোমিটারে থাকা ৩ হাজার ৭২৫টি গাছ কাটার বেআইনি কার্যক্রম কেন সংবিধানের বিধান পরিপন্থী ও আইনবহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই সড়ক নির্মাণকাজে (প্রশস্ত) পরিকল্পনা সংশোধনে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের সচিব, পরিবেশসচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক, সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্ত করতে প্রায় চার হাজার গাছ কাটা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সহস্রাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার হেমায়েতপুর থেকে মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার জরিনা কলেজ মোড় পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার এই আঞ্চলিক মহাসড়ক ১৭ ফুট চওড়া। এটি প্রশস্ত করে ২৪ ফুটে উন্নীত করা হবে। জেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রের বরাত দিয়ে আরও বলা হয়, মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কটি প্রশস্ত করার জন্য দরপত্রের মাধ্যমে এসব গাছ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় জেলা পরিষদ। গত বছরের ৬ নভেম্বর দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র অনুযায়ী, ৩ হাজার ৭২৫টি গাছ ২৮টি গুচ্ছে বিক্রি করা হয়।