ভোগান্তি আরও দুই বছর

উত্তরার আজমপুর পদচারী–সেতুর পূর্ব দিকের আধা কিলোমিটার সড়ক পরিত্যক্ত গাড়ি ও আবর্জনায় ভরা।  ছবি: সাবরিনা ইয়াসমীন
উত্তরার আজমপুর পদচারী–সেতুর পূর্ব দিকের আধা কিলোমিটার সড়ক পরিত্যক্ত গাড়ি ও আবর্জনায় ভরা। ছবি: সাবরিনা ইয়াসমীন
  • আজমপুরের এ সড়ক সংস্কার না হওয়ায় পথচারীদের চলাচলের অনুপযোগী।
  • পরিত্যক্ত গাড়িগুলোকে কেন্দ্র করে রাস্তাটি এখন ভাগাড়।

রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছে পরিত্যক্ত গাড়ি। বহু বছরের পুরোনো ও মরচে ধরা। সড়কের ওপর বাঁশ পুঁতে বেড়া দেওয়া হয়েছে। জায়গায় জায়গায় আবর্জনা। ভাঙাচোরা রাস্তা। উত্তরার আজমপুর পদচারী–সেতুর পূর্ব দিকের আধা কিলোমিটার সড়কটি সর্বশেষ সংস্কার হয়েছে ১০ বছর আগে। এরপর ধীরে ধীরে রীতিমতো ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে এই সড়ক।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) রাস্তাটির সংস্কার করতে চাইলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগের মালিকানায় থাকায় তা করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, আধা কিলোমিটারের এ সড়ক ঠিক হতে আরও অন্তত দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে।
উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের শাহজালাল রোডের মোড় থেকে উত্তর দিকের ঈশা খাঁ রোডের মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত এই রাস্তাটি এবড়োখেবড়ো। কার্পেটিং উঠে যাওয়া সড়কে এখানে-সেখানে গাছের ডাল-পাতা পড়ে থাকে। শাহজালাল রোডের মোড়ে এ সড়কে কয়েকজন ফল বিক্রেতা ভ্যান গাড়িতে ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকান দিয়ে বসেছেন। এর পেছনেই শুরু হয়েছে পুরোনো মরিচা ধরা গাড়ির এলোমেলো সারি। এগুলো উত্তরা পূর্ব থানার মামলার গাড়ি বলে জানা যায়। এই সারি দীর্ঘায়িত হয়েছে উত্তর দিকের ডিএনসিসির শৌচাগার পর্যন্ত।
আজমপুরের এ সড়ক সংস্কার না হওয়ায় পথচারীদের চলাচলের অনুপযোগী। গত মঙ্গলবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ডিএনসিসির ১ নম্বর অঞ্চলের কর্মীরা একটি গাড়ি থেকে এখানে সুরকি ফেলছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরা ৪ নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর রোড থেকে সুরকি এনে এখানে ফেলেন।
ডিএনসিসির কর্মী আলী হোসেন বলেন, ‘সুরকি ফেলে সড়ক চলাচলের জন্য প্রস্তুত করছি। এর আগেও বেশ কয়েকবার বিভিন্ন স্থান থেকে সুরকি নিয়ে ওই রাস্তায় ফেলা হয়েছে। ফলে সড়কটি মোটামুটি চলাচলের উপযোগী আছে।’
এ সড়কে চলাচলকারী প্রবীণ এক ব্যক্তি বলেন, উত্তরার এ সড়কটির মতো খারাপ অবস্থায় নেই আর কোনো সড়ক। পরিত্যক্ত গাড়িগুলোকে কেন্দ্র করে রাস্তাটি এখন ভাগাড়। ভ্রাম্যমাণ অনেক মানুষ এখানে মলত্যাগ করে। খুব উৎকট গন্ধ নাকে আসে।
এ সড়কে থাকা ডিএনসিসির শৌচাগারটির অবস্থাও শোচনীয়। তবে ডিএনসিসির উপসহকারী প্রকৌশলী (অঞ্চল ১) মো. এমদাদুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সর্বশেষ ১০ বছর আগে এ সড়কের সংস্কার ও উন্নয়নকাজ করা হয়েছিল। পরে জানা যায়, এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন। এ কারণে সিটি করপোরেশনের পক্ষে নতুন করে কিছু করার সুযোগ নেই। আর সড়কের কাজ না হলে গণশৌচাগারটিরও কোনো কাজ করা যাচ্ছে না।
সড়কে পরিত্যক্ত গাড়িগুলো ফেলা রাখার বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে উত্তরা পূর্ব থানার পরিদর্শক (অফিসার ইনচার্জ) নূরে আলম বলেন, পুরোনো পরিত্যক্ত গাড়িগুলো এখানে অনেক আগে থেকেই আছে।
পুরোনো মামলাগুলো আদালতের নির্দেশনামতো নিষ্পত্তি করা হলে এগুলো সরানো হবে। নতুন গাড়ি এখানে রাখা হয় না। তা ছাড়া থানায় গাড়ি রাখার মতো কোনো জায়গাও নেই। তবে সড়কটি সংস্কার করা হলে গাড়িগুলো সরিয়ে ফেলা হবে।
সড়কটি নিয়ে ঢাকা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদি ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, এই সংযোগ সড়কটি ইতিমধ্যে বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের আওতায় চলে গেছে। গাজীপুর থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এই সড়কের মাঝখানে এটি নির্মাণ করা হবে।
গাজীপুর থেকে কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। কাজ হয়ে এলে পাশের সড়কগুলোতেও উন্নয়নকাজ করা হবে। এসব কাজ শেষ হতে আরও প্রায় দুই বছর লাগবে।