দুর্গম চর থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন, ধর্ষক গ্রেপ্তার

>
  • গোদাগাড়ীর বয়ারমারির চর।
  • থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন কিশোরীর ভাই।
  • অভিযুক্ত আমজাদ আলীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
  • কিশোরীকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আমজাদ আলী। তিনি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বাউসপুর গ্রামের বাসিন্দা। তবে বয়ারমারি চরে মেয়ের বাড়িতে থাকতেন তিনি। অভিযোগ, গত মঙ্গলবার বিকেলে ওই গ্রামেরই প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন তিনি। তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার করার পর বুধবার রাতে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন ওই কিশোরীর ভাই।

গোদাগাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলতাফ হোসেন বলেন, ১৫ বছরের ওই কিশোরী সেদিন মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিল। ঘাস কেটে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই বৃদ্ধ তাকে ভুট্টাখেতে নিয়ে যান এবং ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে ওই কিশোরীর চিৎকারে এগিয়ে যান স্থানীয় ব্যক্তিরা। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবেই মীমাংসার চেষ্টা চলে। কিন্তু মীমাংসা করতে রাজি হয়নি কিশোরীর পরিবার।

তাই পরদিন বুধবার বিকেলে জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে বিষয়টি জানান নির্যাতিত কিশোরীর এক স্বজন। এরপর পুলিশ সদর দপ্তরের আইসিটি ডেস্ক থেকে বিষয়টি গোদাগাড়ী থানায় অবহিত করা হয়। খবর পেয়েই ওই কিশোরীর বাড়িতে যায় পুলিশ। তারা কিশোরীর সঙ্গে কথা বলে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালিয়ে আমজাদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রাতেই থানায় মামলা করেন ওই কিশোরীর ভাই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোদাগাড়ীর প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) আবু বকর সিদ্দিক জানান, চিকিৎসা ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ওই কিশোরীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। আর অভিযুক্ত আমজাদ আলীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নির্যাতিত ওই কিশোরীকেও আদালতে নিয়ে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে।

রাজশাহীর পুলিশ সুপার মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঞা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ৯৯৯ নম্বরের সেবার ব্যাপারে বিভিন্ন সভায় গিয়ে বলছেন। এই নম্বরে কিছু সেবা ইতিমধ্যে রাজশাহীতে শুরু হয়েছে; কিন্তু ধর্ষক গ্রেপ্তারের ঘটনা এই প্রথম ঘটল। তাও দুর্গম চর এলাকা থেকে এই নম্বরে ফোন করা হয়েছে।

২০১৫ সালের অক্টোবরে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ প্রথম জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর কাঠামো তৈরির কাজ শুরু করে। ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে জনগণকে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রদানে ২০১৬ সালের ১ অক্টোবর থেকে গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এই সার্ভিসটির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এরপর ১২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় সেবাটি। মুঠোফোনে ব্যালেন্স না থাকলেও ৯৯৯-এ ডায়াল করে পুলিশ সদর দপ্তরের আইসিটি ডেস্কে কথা বলে নিজের সমস্যার কথা জানাতে পারেন যে কেউ।