বর্ণ-ভাষায় রঙিন হওয়ার এক শিশুরাজ্য

রং দিয়ে বর্ণমেলা রাঙাচ্ছে শিশু। ছবি: মোছাব্বের হোসেন
রং দিয়ে বর্ণমেলা রাঙাচ্ছে শিশু। ছবি: মোছাব্বের হোসেন

রং পেলে মন তো এমনিতেই নাচে, তার ওপর কৌটাভরা রং! নাও, প্রাণভরে হাত চুবিয়ে নাও। হলো তো। এবার বর্ণের ওপর দাও ছাপ। ছপাৎ! ছাপ মারা শেষ। এবার? হুঁ, বসে যাও টি-শার্ট রং করায়। এভাবে রঙে রঙে রঙিন হওয়ার নানা কাণ্ড সেই বর্ণমেলায়। ঢাকার ধানমন্ডিতে সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে বর্ণ আর ভাষা নিয়ে এই হচ্ছে প্রথম আলোর নবম আয়োজন। সহযোগী সার্ফ এক্সেল।


মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মৌমি বলল, ‘অনেক মজা পাচ্ছি বর্ণ রঙিন করতে পেরে। আমার হাতও রঙিন হয়ে উঠেছে।’

টি-শার্টে নিজেদের রং-তুলির আঁচড় দিচ্ছে শিশুরা। ছবি: মোছাব্বের হোসেন
টি-শার্টে নিজেদের রং-তুলির আঁচড় দিচ্ছে শিশুরা। ছবি: মোছাব্বের হোসেন

মৌমির মতো আরও অনেক শিশু এসেছে বর্ণমেলায়। দুই ভাইবোন আয়ান ও সোহা। ছবি আঁকতে ভালোবাসে। আয়ান ওয়াইডব্লিউএসএ স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। আর হারমান মেইনার স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে সোহা। বর্ণমেলায় তাঁরা টি-শার্টে নিজেদের মতো করে ছবি আঁকছে। সেই ছবি আঁকার পর শুকিয়ে আবার তাদের দিয়ে দেওয়া হবে। এই আয়োজন করেছে সার্ফ এক্সেল।

নাগরদোলার সামনে শিশুদের লম্বা লাইন। অনেক শিশু লাইনে দাঁড়িয়েছে নাগরদোলায় উঠবে বলে। আর যারা উঠেছে, নাগরদোলা চলার সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে সে কী চিৎকার! এমনই এক শিশু আবরার জাহিন। সে ধানমন্ডির স্কলার স্কুল ও কলেজে পড়ে। বর্ণমেলায় এসে সে প্রথমে শহীদ মিনারে ফুল দিয়েছে। এরপর বর্ণমেলায় রং দিয়ে রাঙিয়েছে। আবরার জানায়, অনেক দিন ধরে তার নাগরদোলায় চড়ার শখ। এবার বর্ণমেলায় নাগরদোলা পেয়ে সে শখ মিটিয়েছে এবং অনেক মজা পেয়েছে।

নাগরদোলার সামনে শিশুদের ভিড়। ছবি: মোছাব্বের হোসেন
নাগরদোলার সামনে শিশুদের ভিড়। ছবি: মোছাব্বের হোসেন

ফুটবলের ছোট্ট একটি গোলবার। সেখানে গোল দিতে হবে। এই খেলা খেলতে অনেক লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে শিশুরা। গোল দিয়ে উল্লসিত মালিবাগের তাসফিয়া। সে পড়ে লিটল জুয়েলস স্কুলে। তাসফিয়া জানায়, সে পুতুলনাচ, খাট্টা-মিঠঠা দেখে সবচেয়ে বেশি মজা পেয়েছে। এরপর ফুটবল খেলে গোল দিয়েছে। এই খেলায়ও সে অনেক আনন্দ পেয়েছে। সারা দিন বর্ণমেলায় ঘুরবে সে। আরও নানা খেলায় অংশ নেবে।

বালুর স্তূপে খেলছে শিশুরা। ছবি: মোছাব্বের হোসেন
বালুর স্তূপে খেলছে শিশুরা। ছবি: মোছাব্বের হোসেন

মাঠের এক কোণে বালুর স্তূপ। সেখানে বালু দিয়ে নানান খেলা খেলছে শিশুরা। কেউ বড় বড় স্তূপ করে ঘর বানাচ্ছে। কেউবা পায়ের ওপর বালু দিয়ে ঢেকে তৈরি করছে নতুন এক ছাঁচ। সেখানে কথা হয় আদিব আর আয়াতের সঙ্গে। পান্থপথ এলাকা থেকে তারা এসেছে। বালু দিয়ে খেলতে অনেক মজা পাচ্ছে বলে জানালেন তাদের মা আফসানা জাহান। তিনি বলেন, ইট-পাথরের এই শহরে খেলার জায়গা নেই বললেই চলে। কিন্তু বর্ণমেলায় এসে ফুটবল, নাগরদোলা, টি-শার্টে রং করা, ইকরি-টুকটুকিদের সঙ্গে ছবি তোলাসহ নানা আয়োজনে অংশ নিচ্ছে। এমন দিন বারবার আসে না। তাই এখানে আসতে পেরে তাঁর শিশুরা অনেক খুশি।