হঠাৎ বৃষ্টি বই ভেজালও দমেননি প্রকাশকেরা

আগের রাতের বৃষ্টিতে ভিজে গেছে বই। বইমেলা প্রাঙ্গণে সেই বই শুকাতে দিয়েছেন অনেকে। গতকাল অমর একুশে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে।  ছবি: প্রথম আলো
আগের রাতের বৃষ্টিতে ভিজে গেছে বই। বইমেলা প্রাঙ্গণে সেই বই শুকাতে দিয়েছেন অনেকে। গতকাল অমর একুশে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে। ছবি: প্রথম আলো

এসব দৃশ্য দেখে মেলায় নতুন আসা কোনো পাঠক বা দর্শনার্থী দূর থেকে ভাবতেই পারেন—আরে, বইগুলোকে এভাবে রাখা হয়েছে কেন? রোদে দেওয়া হয়েছে কেন?

কাছে এলেই ভুল ভাঙবে। গতকাল ভোররাতের দিকে যে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল, মাটিতে ছড়ানো বইগুলো তারই সাক্ষ্য বহন করছে। বৃষ্টির ফলে মেলার বেশ কিছু স্টলের বইপত্র ভিজে গেছে। দিনভর শুকানো হয়েছে সেগুলো। এমনকি শেষ বিকেলেও কয়েকটি স্টলের সামনে চোখে পড়ল বই শুকানোর দৃশ্য। কেউ কেউ আবার ভেজা বইগুলো মেলার বাইরে শুকাতে দিয়েছেন বলে জানালেন।

কাল ভোররাতের দিকে আচমকা শুরু হয় দমকা হাওয়া। খানিক পরে নামে বৃষ্টি। তাতেই কম্ম কাবার। প্রথমা প্রকাশন, সময় প্রকাশন, বাঙালিসহ বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হলো বেশ কয়েকটি প্রকাশনার স্টলের বই।

শিশু চত্বরে কয়েকটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টলের সামনে বই শুকানো হচ্ছিল বিকেলবেলায়ও। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান চিলড্রেন বুক কালেকশন। প্রায় শ দুয়েক বই ভিজে গেছে তাদের। কীভাবে ভিজল—জানতে চাইলে বললেন, ‘স্টলের সিলিং ভেদ করে বৃষ্টির পানি ঢুকে বই ভিজেছে।’

একইভাবে সিলিং থেকে চুইয়ে পানি পড়ে বই ভিজেছে সময় প্রকাশনেরও। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কত বই ভিজেছে? ‘সেই হিসাব এ মুহূর্তে আর করতে চাই না। এখন বিক্রিবাট্টার সময়। সময়মতো যে আবার বইপত্র নিয়ে মেলায় বসতে পেরেছি, এতেই আমি খুশি।’ এটুকু বলার পর বললেন, ‘মনে হয় হাজার খানেক বই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকালে খুব খারাপ অবস্থা ছিল আমাদের। আসলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর তো কারও হাত নেই।’

ভেজা বইগুলো মেলার বাইরে সরিয়ে নিয়েছে প্রথমা প্রকাশন। এ সংস্থার বিক্রয়কর্মীরা বললেন, ‘আমাদের কিছু বই ভিজেছে। কী করব। সেগুলো আমরা অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছি।’

বেরসিক দমকা বাতাস আর বৃষ্টি বই ভেজালেও দমাতে পারেনি প্রকাশকদের। বিকেলের মধ্যেই আবারও পসরা সাজিয়ে বসেছেন তাঁরা। বেচাকেনার তুঙ্গ সময় যে বয়ে যায়!