মার্কিন সহায়তা অব্যাহত থাকবে: ইউএসএইড

বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক উন্নয়ন সহায়তা অতীতের মতো অব্যাহত থাকবে। তবে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গণতন্ত্র ও সুশাসন কর্মসূচির অর্থ অন্য কর্মসূচিতে সমন্বয়ের পরিকল্পনা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।


যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএইড) মিশন ডিরেক্টর ইয়ানিনা ইয়ারুজেলস্কি আজ সোমবার এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। ইউএসএইডের নতুন প্রধান হিসেবে ইয়ারুজেলস্কি গত ২ জানুয়ারি ঢাকায় আসেন।

এদিকে ইউএসএইড ও যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউকেএইড) অর্থায়নে পরিচালিত এক জনমত জরিপ সম্পর্কে ইয়ানিনা ইয়ারুজেলস্কি বলেন, জরিপে দুই দলের জন্য বার্তা রয়েছে। জরিপে ৫৭ শতাংশ মানুষ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আবার ৭৯ শতাংশ মানুষ মনে সহিংসতার বিপক্ষে মত দিয়েছেন। আর বেশির ভাগ মানুষ মত দিয়েছেন পাঁচ বছরের আগেই নির্বাচন হওয়া উচিত।

প্রসঙ্গত, ২ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল (ডিআই) পরিচালিত এক জরিপে বলা হয়েছে, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সব দল অংশ নিলে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হতো।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মার্কিন সহায়তা অব্যাহত থাকবে কি না এবং গণতন্ত্র ও সুশাসনের কর্মসূচিতে মার্কিন পরিকল্পনার বিষয়ে ইয়ানিনা ইয়ারুজেলস্কির কাছে জানতে চাওয়া হয়। ইউএসএইড প্রধান বলেন, দরিদ্র ও সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনা তাঁদের কর্মসূচির মূল লক্ষ্য। এখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই থাকুক না কেনো, এই লক্ষ্য অব্যাহত থাকবে। তবে তিনি গণতন্ত্র ও সুশাসন কর্মসূচির আওতায় সংসদের জন্য নির্ধারিত কর্মসূচিতে সহায়তা কমানোর কথা উল্লেখ করেন।

ইউএসএইড প্রতিবছর কী পরিমাণ সহায়তা দেয় ও সুশাসন কর্মসূচিতে অর্থায়ন কতটা কমবে জানতে চাইলে ইয়ানিনা ইয়ারুজেলস্কি বলেন, ২০১৩ সালে বাংলাদেশকে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ বছরও তা অব্যাহত থাকবে। সুশাসন ও গণতন্ত্র কর্মসূচির অর্থ কমানোর কোনো পরিকল্পনা নেই তবে তা অন্য কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এটা কার্যকর হবে।

গত সংসদের প্রধান বিরোধী দলকে ছাড়াই ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশ্ন রয়েছে। তাই এ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত বাংলাদেশ সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র স্বীকৃতি দেয় কি না। এ প্রশ্নের উত্তর দেন ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা। তিনি বলেন, সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্ন আসে না। প্রশ্ন হচ্ছে রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এ অবস্থান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

শিগগিরই বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সময়সীমা প্রসঙ্গে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে মজীনা বলেন, ‘৬ জানুয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত বিবৃতিতে বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। ওই অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমরা যত শিগগির সম্ভব নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অবিলম্বে সংলাপ শুরুর আহ্বান জানিয়েছি। আর সময়সীমা ঠিক করে দেওয়াটা যুক্তরাষ্ট্রের কাজ নয়।’