ঢাকাবাসীর জন্য অপেক্ষা করছে দুর্ভোগ

বিভিন্ন জনসমাবেশ ঘিরে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
বিভিন্ন জনসমাবেশ ঘিরে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

আগামী ৭ মার্চের জনসভা ঘিরে দুর্ভোগ অপেক্ষা করছে ঢাকা নগরবাসীর জন্য। ঢাকার ভেতরে চলাচলকারী বিভিন্ন রুটের বাসের ১৫ থেকে ১৬ হাজার মালিক ও শ্রমিক ওই দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডাকা জনসমাবেশে যোগ দেবেন। ফলে তীব্র যানবাহন সংকটে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

মালিক ও শ্রমিকদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। তবে তারা বলেছেন, ঢাকায় বড় জনসমাবেশ হলে প্রতিবার ভিড়ের কারণে যানবাহন চলাচলে যে অস্বাভাবিকতা শুরু হয় ওই দিন তা-ই হবে। শ্রমিকদের একটি অংশ সভায় গেলেও আরেক অংশ পরিবহনে থাকবে। তাই যানবাহন কম হবে না বলে তাদের দাবি।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় দিনটিকে এবার ভিন্ন মাত্রায় স্মরণ করতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি। স্মরণকালের বড় জনসভার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।

গত জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, কর্মদিবসে রাস্তা বন্ধ করে কোনো শোভাযাত্রা বা র‍্যালির অনুমতির দেওয়া হবে না। এমনকি আওয়ামী লীগও ছুটির দিনে তাঁদের অনুষ্ঠান কর্মসূচি ফেলবে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে গতকাল পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বৈঠক করেন। বৈঠকে ৭ মার্চ উপলক্ষে জনসভায় মালিক শ্রমিকেরা অংশ নেবেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মালিক ও শ্রমিকদের সংগঠনগুলোর নেতারাই এ কথা জানিয়েছেন।

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, জনসভায় মালিক ও শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ১৫ থেকে ১৬ হাজার লোক যাবে বলে গতকালের সভায় আমরা জানিয়েছি। তাদের বেলা ২টার মধ্যে জনসভায় অংশ নিতে বলা হয়েছে।’

সভা সূত্র জানায়, মেয়র সাঈদ খোকন ৭ মার্চ বিপুলসংখ্যক লোক সমাগমের আহ্বান জানান। এ এযাবৎকালের একটি বড় সমাবেশ করার লক্ষ্যের কথাও জানান তিনি।

তবে মালিক ও শ্রমিকেরা সভায় গেলেও যান চলাচলে কোনো বিঘ্ন হবে না বলে দাবি করেন এনায়েত উল্লাহ। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, শ্রমিকেরা কাজ করে দুই শিফটে। এ সময় কিছু শ্রমিক সভায় গেলেও অন্যরা থাকবে। ঢাকায় কোনো সমাবেশ হলে তো যান চলাচলে বিঘ্ন হয়ই। তবে সেটা লোক সমাগমের জন্য। যানবাহন কম থাকার জন্য নয়।

জানতে চাইলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মাহবুবুর রহমান বলেন, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, ফুলবাড়িয়া, মহাখালী, গাবতলী ও মিরপুর বাস টার্মিনাল থেকে শ্রমিকেরা দলে দলে সমাবেশে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখানে বক্তব্য রাখবেন বলে পরিবহন শ্রমিকেরা ‘স্বেচ্ছায়’ সমাবেশে অংশ নেবে।

যানবাহনে চলাচলকারী নগরবাসীর জন্য ৭ মার্চ তবে কি দুর্ভোগ হবে না—এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুর রহমান বলেন, সবাই তো ওই দিন সমাবেশে যাবে। আর আমরা তো বাস বন্ধ করছি না।

রাজধানীতে সমাবেশের কারণে প্রায়ই নানা ভোগান্তিতে পড়েন কর্মব্যস্ত মানুষ। প্রধান সড়ক বন্ধ করে করা এসব সমাবেশের কারণে তীব্র যানবাহন সংকটে পড়ে মানুষ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। এমন পরিস্থিতে গত জানুয়ারি ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা শহরে কার্যদিবসে সমাবেশ বা মিছিল করা হবে না। তবে ৭ মার্চ ঘিরে আবারও কর্মদিবসে বিশাল জনসভার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ।