ট্রাকে তুলে নিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মাদারীপুরের রাজৈরে বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ১৬ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আজ সোমবার সকালে রাজৈর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক সপ্তাহ আগে ওই কিশোরী রাজৈর উপজেলায় তার বোনের বাড়ি বেড়াতে আসে। শনিবার বিকেলে মেয়েটি তার বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কংশুরে যাওয়ার জন্য টেকেরহাটে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। এ সময় তার বোনের পাশের বাড়ির পরিচিত ট্রাকচালক ওবাইদুল শেখ (৩২) ট্রাক নিয়ে যাওয়ার পথে ওই কিশোরীকে দেখতে পান এবং ট্রাক থামান। গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তিনি ওই কিশোরীকে ট্রাকে তুলে নেন। পরে ট্রাকচালক মুঠোফোনে তাঁর দুই সহযোগী শাকিল মাতুব্বর (১৮) ও মিকাঈল শেখকে (১৮) খবর দিয়ে আনেন। তাঁরা তিনজন মিলে কিশোরীকে নিয়ে রওনা হন। ওবাইদুর শেখ ট্রাক নিয়ে গোপালগঞ্জে না গিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে রাত ১২টার দিকে পুনরায় টেকেরহাট বন্দরে ফিরে আসেন। পরে টেকেরহাট কবীর মাঠে ট্রাক থামিয়ে চালক ওবাইদুল শেখ ও তাঁর সহযোগীরা পর্যায়ক্রমে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে মাঠে ফেলে রেখে চলে যান। একপর্যায়ে অসুস্থ অবস্থায় ওই কিশোরী তার বোনের বাড়ি ফিরে গিয়ে ঘটনাটি জানায়।


পরে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে রোববার রাতে এক বাড়িতে সালিস বৈঠক ডাকে। এ খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত ট্রাকচালক ওবাইদুল এবং তাঁর সহযোগী আমীন মাতুব্বরের ছেলে শাকিল মাতুব্বর ও খলিল শেখের ছেলে মিকাঈল শেখকে গ্রেপ্তার করে।

ওই কিশোরীর বোন বলেন, ‘আমার বোনকে একা পেয়ে ওরা ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছে। আমরা অসহায়। তাই গ্রামের মাদবররা সালিসের জন্য বৈঠক ডাকে এবং আমাদের সেখানে যেতে বাধ্য করে। পরে পুলিশকে জানালে তারা আমাদের পাশে দাঁড়ায়। আমার বোনের জীবন নিয়ে যারা এমন জঘন্য কাজ করল, তাদের বিচার চাই।’

অভিযুক্ত ট্রাকচালক ওবাইদুল শেখের বাবা আকুবালি শেখ বলেন, ‘আমি জানি না ওরা কী করেছে। মাদবররা বৈঠকে আসতে বলেছিল তাই বৈঠকে আসি। সালিস শুরু হওয়ার আগেই পুলিশ এসে ওদের ধরে নিয়ে যায়।’

রাজৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সিরাজুল ইসলাম সরদার বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবার অসহায়। তারা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ভয়ে প্রথমে মুখ খুলতে চায়নি। পরে তারা আমাদের সব খুলে বলেছে। নির্যাতিতার মা বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। শারীরিক পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’