উত্তরা গণভবন দেখতে এসে ফিরে গেলেন দর্শনার্থীরা

বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে বন্ধ রাখায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা নাটোরের উত্তরা গণভবনে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে গেছেন। আজ শুক্রবার বেলা দুইটায় ছবিটি তোলা হয়। ছবি: মুক্তার হোসেন
বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে বন্ধ রাখায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা নাটোরের উত্তরা গণভবনে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে গেছেন। আজ শুক্রবার বেলা দুইটায় ছবিটি তোলা হয়। ছবি: মুক্তার হোসেন

সংগ্রহশালা যুক্ত করে নতুনভাবে নাটোরের উত্তরা গণভবনকে সাজানো হয়েছে। এ নিয়ে প্রচারও হয়েছে অনেক। আজ শুক্রবার সংগ্রহশালা দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করার কথাও ছিল। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কারণে হঠাৎ বন্ধ রাখা হলো দর্শনার্থী প্রবেশ। আগে থেকে ঘোষণা না থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শকেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্ষোভ নিয়ে ফিরে গেছেন।

আজ সেখানে গিয়ে দেখা যায়, নাটোরের দিঘাপতিয়া উত্তরা গণভবন দেখতে শত শত দর্শনার্থী এসে ভিড় জমিয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম গণভবনের সংগ্রহশালা উদ্বোধন করতে আসায় স্থানীয় প্রশাসন সকাল থেকে গণভবনে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। তবে বিষয়টি আগে থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়নি।

বেলা একটার সময় প্রধান ফটকে গিয়ে দেখা যায়, মেহেরপুরের গাংনী উচ্চবিদ্যালয়ের ৮০ জন শিক্ষার্থী এসেছে গণভবন দেখতে। একই সময় দিনাজপুরের পার্বতীপুর, পাবনার ঈশ্বরদী ও কুষ্টিয়া থেকে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীসহ অনেক মানুষ গণভবন দেখতে এসে বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের গণভবনের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। টিকিট কাউন্টারগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মীরা প্রধান ফটক বন্ধ করে রেখেছেন।
গাংনী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আসা শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম জানায়, তারা দুই ঘণ্টা ধরে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন, ভেতরে সচিব আছেন, তাই ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থাকা এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে এভাবে দর্শনীয় স্থান বন্ধ রাখা অন্যায়। আগে জানা থাকলে তাঁরা আজ এখানে আসতেন না। শিক্ষার্থীরা অনেক আনন্দ নিয়ে এসেছিল। ভেতরে প্রবেশ করতে না পেরে তারা মনে কষ্ট পেয়েছে।
বিকেল চারটা পর্যন্ত গণভবনে প্রবেশের শেষ সময় পর্যন্ত জানা গেছে, কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও জেলা প্রশাসকের নেজারত শাখার দায়িত্বরত সহকারী কমিশনার (এনডিসি) অনিন্দ্য মণ্ডল বলেন, গণভবনের ভেতরে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নানা আনুষ্ঠানিকতা থাকায় গণভবন সংশ্লিষ্ট সবাই প্রস্তুতিমূলক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ কারণে দর্শনার্থীরা ঢোকার সুযোগ পাননি। তবে এ ব্যাপারে আগে থেকে কোনো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি বলে তিনি স্বীকার করেন।

এদিকে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম গণভবনে রাজপরিবারের সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন। এখানে রাজা দয়ারাম রায়ের পরিবারের ব্যবহৃত আসবাব, পোশাক, পাগড়ি, পাণ্ডুলিপি, চিঠিপত্র ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র স্থান পেয়েছে। আগের ট্রেজারি ভবনকে সংগ্রহশালা হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর আগে সচিব উত্তরা গণভবনের গ্র্যান্ড মাদার হাউস লেক, রানিমহল, হরিণচূড়া ও আম্রকানন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন করেন। নবনির্মিত বাগানে বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো হৈমন্তীগাছ পরিদর্শন করেন। পরে তিনি গণভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
এ সময় রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার নূর উর রহমান, জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন, পুলিশ সুপার বিজয় বিপ্লব তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম, নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।