ডিসি-ইউএনওর ফোন নম্বর ক্লোন করে প্রতারণা

‘চেয়ারম্যান সাহেব, কেমন আছেন? একটু সমস্যায় পড়েছি, কিছু টাকা লাগবে। যদি সম্ভব হয় দ্রুত এই (আরেকটি নম্বর) নম্বরে বিকাশ করে কয়েক হাজার টাকা পাঠান। এটা দ্রুত করতে হবে।’

‘তহশিলদার সাহেব, আমার ভাই হাসপাতালে। দ্রুত কয়েক হাজার টাকা লাগবে। একটু বিকাশ করে পাঠান।’

‘উপজেলা চেয়ারম্যান সাহেব, কেমন আছেন? কিছু বরাদ্দ এসেছে, এ জন্য কিছু টাকা লাগবে। টনপ্রতি কয়েক হাজার টাকা দিতে হবে।’

দুই সপ্তাহ ধরে কুষ্টিয়ার কয়েকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সরকারি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে এভাবে টাকা চাওয়া হয়েছে। অথচ এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তারা কিছুই জানতে পারছেন না।

আজ শনিবার সকালে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক (ডিসি) জহির রায়হানের মোবাইল ফোনও ক্লোনের শিকার হয়েছে। ওই নম্বর থেকে কয়েকজনকে ফোন করে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ভেড়ামারা ইউএনও সোহেল মারুফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মোবাইল নম্বর ক্লোন করে উপজেলার কয়েকজন চেয়ারম্যানদের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি ওই মোবাইল অপারেটরকে জানালেও তারা কোনো সদুত্তর বা প্রতিকার দিতে পারেনি।’

মিরপুর ইউএনও এস এম জামাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে খুবই বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। আমাদের সরকারি ব্যবহৃত নম্বরগুলো সবই গ্রামীণফোনের এবং করপোরেট নিবন্ধিত। তারপরও কীভাবে এসব হচ্ছে তা বোধগম্য হচ্ছে না।’

একই সমস্যায় পড়েছেন ভেড়ামারা ও কুষ্টিয়া সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তাঁদের নম্বরও ক্লোন করে তহশিলদারদের কাছ থেকে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

শনিবার জেলা প্রশাসকের নম্বর ক্লোন করে কয়েকজনকে ফোন দেওয়া হয়। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসক জহির রায়হান দুপুর ১২টার দিকে তাঁর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘জেলা প্রশাসক কুষ্টিয়া-এর অফিশিয়াল মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অসাধু লোকজন প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। এ বিষয়ে সবাইকে সাবধানতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হলো।’

জহির রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এর আগেও ২০১৬ সালের অক্টোবরে এই জেলায় যোগদানের কয়েক দিন পর এমন পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম। সে সময় পুলিশকে জানানোও হয়েছিল। এবারও জানানো হয়েছে।’