সাংসদের বাড়িতে ডাকাতি!

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাংসদ দবিরুল ইসলামের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। ডাকাতির সময় সাংসদের স্ত্রী, গৃহপরিচারিকা ও নৈশপ্রহরী ছিলেন বাড়িতে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার গোয়ালকাড়ী ডাঙ্গীবাজারে সাংসদ দবিরুল ইসলামের বাড়ি। সেখানে তিনি তাঁর দুই ছেলে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোমিনুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে থাকতেন। তিনতলার বাড়িটির চারপাশে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসি) বসানো রয়েছে। চিকিৎসার জন্য দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গত ৯ মার্চ ব্যাংকক গেছেন সাংসদ।

পুলিশ ও দবিরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটার দিকে ১৭-১৮ জন সশস্ত্র ডাকাত সংসদ সদস্যের বাড়ির সীমানাপ্রাচীর পেরিয়ে ভেতরে ঢোকে। এরপর ডাকাতেরা বাড়ি নৈশপ্রহরী দবিরুল ইসলাম (৫৫) ও দীপক কুমার রায়কে (১৮) আটকে রাখে। পরে তারা পেছনের ফটকের তালা ভেঙে বাড়ির ভেতরে ঢোকে।

সাংসদের স্ত্রী মোমিনা খাতুনকে দেখভাল করেন হাসি বেগম (৩৫) নামের এক নারী। তিনি ওই সময় সাংসদের স্ত্রীর পাশেই ছিলেন। হাসি বেগম বলেন, হঠাৎ দরজায় আঘাতের শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। পরে দরজা খুলে দিলে ঘরের ভেতর পাঁচ-ছয়জন ডাকাত ঢুকে পড়ে। ঢুকেই তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে আলমারির চাবি দিতে বলে। পরে ডাকাতেরা অন্যান্য ঘরে ঢুকে যন্ত্র দিয়ে আলমারির তালা ভেঙে জিনিসপত্র তছনছ করে।

সাংসদের স্ত্রী মোমিনা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডাকাতেরা প্রথমে আমার গলা ও হাতের স্বর্ণালংকার খুলে নেয়। পরে বাড়ির আটটি ঘরের আলমারির তালা ভেঙে জিনিসপত্র তছনছ করে টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।’ তবে স্বর্ণালংকার ও টাকার পরিমাণ জানাতে পারেননি তিনি।

ভোরে খবর পেয়ে পুলিশ সাংসদের বাড়িতে যায় এবং লোলপুকুর এলাকার একটি বাঁশঝাড় থেকে লোহার হাতল, মুখোশ, কাপড়চোপড়, গয়নার বাক্স ও দুটি নিষ্ক্রিয় ককটেল উদ্ধার করে।

দবিরুল ইসলামের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, পুরো বাড়ি তছনছ করা হয়েছে। ডাকাতেরা ঘরের আলমারি ও ওয়ার্ডরোব ভেঙে সোনার গয়না, টাকা নিয়ে গেছে। বাড়িতে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাত দলে ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য ছিল। সাংসদ ও তাঁর ছেলেরা দেশের বাইরে থাকায় লুট হওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকারের পরিমাণ বলা যাচ্ছে না।

অন্যদিকে ডাকাতির খবর পেয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. আখতারুজ্জামান ও পুলিশ সুপার (এসপি) ফারহাত আহমেদ সাংসদের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। এ ছাড়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা তদন্ত শুরু করেছেন।

পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আবদুল মজিদ প্রথম আলোকে বলেন, সাংসদের বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। অপরাধীদের শনাক্ত করার যথেষ্ট উপকরণ হাতে আছে। ওই সব বিশ্লেষণ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।