সাবেক স্ত্রীর হাত-পায়ের রগ কেটে দিলেন স্বামী

তালাক দেওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় এক ব্যক্তি তাঁর সাবেক স্ত্রীর হাত পায়ের রগ কেটে দিয়েছেন। ওই নারীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে সরাইলের শাহবাজপুর ইউনিয়নের হবেলিপাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত কামরুল মিয়া (২৮) ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চার বছর আগে উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের হবেলিপাড়া গ্রামের রায়হান আক্তার নুসরাতের (২২) সঙ্গে শাহবাজপুর গ্রামের কামরুল মিয়ার বিয়ে হয়। কামরুল চুরি-ডাকাতি, মাদক সেবনসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। অনেক চেষ্টা করেও নুসরাত কামরুলকে এসব অভ্যাস থেকে বিরত করতে পারেননি। পাশাপাশি কামরুল নুসরাতের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। এতে তাঁর দুটি সন্তান গর্ভাবস্থায় মারা যায়। এসব অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সাত মাস আগে আদালতের মাধ্যমে নুসরাত কামরুলকে তালাক দেন।

কামরুলকে তালাক দেওয়ার পর ছয় মাস আগে নুসরাত গ্রামের একটি কওমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা শুরু করেন। অন্যদিকে কামরুল নুসরাতকে পুনরায় স্ত্রী করে ঘরে তোলার ব্যর্থ চেষ্টা করেন। কামরুল নুসরাতকে গত কয়েক দিন ধরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে নুসরাত মাদ্রাসায় যাচ্ছিলেন। পথে নুসরাতকে জড়িয়ে ধরে প্রথমে গলার নিচে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করেন কামরুল। নুসরাত মাটিতে লুটিয়ে পড়লে কামরুল তাঁর দুই পায়ের রগ ও ডান হাতের আঙুলে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। পরে গ্রামবাসী নুসরাতকে উদ্ধার করে প্রথমে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নুসরাতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়। হামলার সময় কামরুলের বড় দুই ভাই চাইনো মিয়া (৩০) ও বুলবুল মিয়া (৩৫) কামরুলকে সহায়তা করেন বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনা ছাড়াও কামরুল গরু চুরিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।