রামপাল প্রকল্প হলে দুই দেশেরই ক্ষতি

তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। জাতীয় প্রেসক্লাব, ১৯ মার্চ। ছবি: সাইফুল ইসলাম
তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। জাতীয় প্রেসক্লাব, ১৯ মার্চ। ছবি: সাইফুল ইসলাম

রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে দুই দেশের সাধারণ মানুষ ও বিজ্ঞানীরা একমত হয়েছেন। এসব দাবির সঙ্গে সম্মান জানিয়ে সুন্দরবনবিনাশী রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবি করছে তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে তারা এসব বিষয় তুলে ধরে সরকারের উদ্দেশে বলে, এখনো সময় আছে জনগণের দাবি মেনে এই প্রকল্পটি বাতিল করুন।

সমাবেশে জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, রামপাল প্রকল্পের কারণে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। এতে শুধু বাংলাদেশের নয়, ভারতের ৫০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অথচ ভারতীয় কোম্পানি এনটিপিসির মাধ্যমে ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, কয়লাও ভারত থেকে আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

আনু মুহাম্মদ বলেন, এত দাবি, এত কর্মসূচি ও এত প্রতিবাদ হওয়ার পরেও রামপাল প্রকল্প সরকার বাতিল করছে না। উল্টো দেশের পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে ৩২০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে সুন্দরবনের চারপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকায় শিল্প–কারখানা করার অনুমতি দিয়েছে। আর ওই সিদ্ধান্ত এসেছে পরিবেশ রক্ষায় গঠন করা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পরিষদ থেকে। আর এসব কারখানার মালিক হচ্ছে সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা। এসব সিদ্ধান্ত থেকে বোঝা যাচ্ছে, সরকার সুন্দরবন রক্ষায় আন্তরিক না। ফলে জনগণকে আরও ঐক্যবদ্ধ লড়াই করে সুন্দরবন রক্ষা করতে হবে।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ভারত ধীরে ধীরে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরে আসছে। আর তাদের বন্ধ হতে যাওয়া কয়লা খনিগুলো থেকে বাংলাদেশের রামপাল প্রকল্পে কয়লা পাঠানোর কথা শোনা যাচ্ছে। রামপাল প্রকল্প বাতিলের পক্ষে দেশের বেশির ভাগ মানুষ অবস্থান নিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ফুলবাড়ী প্রকল্প তৎকালীন সরকার বাতিল করতে বাধ্য হয়েছিল। কারণ তাতে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ছিল। রামপাল প্রকল্প এলাকার স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আহ্বায়ক সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক মোশরেফা মিশু ও গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা। সমাবেশ শেষে জাতীয় কমিটির একটি মিছিল প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।