'রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের নিজস্ব স্বার্থ নেই'

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের নিজস্ব স্বার্থ নেই। ২১ মার্চ, ঢাকা। ছবি: ইউএনবি
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীনের নিজস্ব স্বার্থ নেই। ২১ মার্চ, ঢাকা। ছবি: ইউএনবি

চীনের রাষ্ট্রদূত ঝ্যাং জুয়ো বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে চীনের নিজস্ব স্বার্থ নেই। বরং আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সুরাহার জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সত্যিকার অর্থেই এবং ইতিবাচকভাবে সহযোগিতার চেষ্টা করছে।

বুধবার রাজধানীর চীন দূতাবাসে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়ে তাঁর দেশের অবস্থান নিয়ে এ কথা বলেন।

ঢাকায় চীন দূতাবাসের প্রথমবারের মতো আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নোত্তর পর্বে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যা ও চীনের ভূমিকা নিয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়।

রোহিঙ্গা সমস্যার চটজলদি কোনো সমাধান নেই বলে মত দেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক, জাতিগত এবং ধর্মীয় প্রেক্ষাপট সমস্যাটিকে জটিল করে তুলেছে।

ঝ্যাং জুয়ো বলেন, ‘এ বিষয়টিতে চীনের কোনো নিজস্ব স্বার্থ নেই। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সহযোগিতার জন্য আমরা সত্যিকার অর্থেই চেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের পরামর্শ আন্তরিক, বস্তুনিষ্ঠ এবং ইতিবাচক। দুই পক্ষের ব্যাপারেই আমরা নিরপেক্ষ ভূমিকা অব্যাহত রাখব।’

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের চুক্তির আলোকে এখন পর্যন্ত যে অগ্রগতি হয়েছে, তাতে চীনের রাষ্ট্রদূত সন্তোষ প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী প্রথম দফায় যাঁদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে, তাঁদের যত দ্রুত সম্ভব রাখাইনে ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসনের জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গত মাসে বাংলাদেশ ৮ হাজার ৩২ জন রোহিঙ্গার প্রথম তালিকা দিয়েছিল মিয়ানমারকে। গত সপ্তাহে এঁদের মধ্যে ৩৭৪ জনকে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার রাজি হয়েছে।

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে জানতে চাইলে রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখার কথা জানান রাষ্ট্রদূত। ঝ্যাং জুয়ো বলেন, ‘আমরা চাই, বাংলাদেশে নির্বিঘ্নে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। আমাদের প্রত্যাশা বাংলাদেশের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।’

তবে চীনের নতুন রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জনগণ যে রায় দেবে, সেটির প্রতি তাঁদের শ্রদ্ধা থাকবে। দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতার যে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তা নতুন ধাপে উন্নীত হোক, সেটি দেখতে আগ্রহী চীন।

বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে চীনের বিনিয়োগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ঝ্যাং জুয়ো বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে যুক্ত হতে শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছে। এখন পর্যন্ত যে অগ্রগতি হয়েছে, তাতে অন্যদের চেয়ে চীনের কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাব অন্যদের চেয়ে ভালো। চীন বিশ্বাস করে, এটি পুরোপুরি একটি বাণিজ্যিক বিনিয়োগ প্রকল্প এবং একে রাজনীতিকরণ করা হবে না। এটি চীনের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য ব্যবহার হবে না, এটিও বিশ্বাস করে চীন। দেশটির আশা, বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্বচ্ছতার মধ্য দিয়ে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করে সবচেয়ে ভালো অংশীদারদের বেছে নেবে।