সবকিছু পুড়ে গেল এতিমখানার ১০০ শিক্ষার্থীর

আগুনে পুড়ে যায় হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের সবকিছু। ২৩ মার্চ ২০১৮। ছবি: প্রথম আলো
আগুনে পুড়ে যায় হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষার্থীদের সবকিছু। ২৩ মার্চ ২০১৮। ছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির ১০০ শিক্ষার্থীর বই-খাতা, খাবার, পোশাকসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু পুড়ে গেছে।

শুক্রবার বিকেলে উপজেলার ভান্ডারদহ গ্রামের জামালুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এতিমখানার আবাসিক ছাত্র আশিকুর রহমান বলেন, ‘জুমার নামাজ শেষে খাওয়াদাওয়া করে বিশ্রাম নেওয়ার সময় হঠাৎ বিদ্যুতের বোর্ডে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো কক্ষ আগুনের ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে যায়। পরে আগুন লেগে বই, পোশাক, খাবারসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।’

মাদ্রাসার কিতাব বিভাগের শিক্ষক মুফতি মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই আবাসিক ভবনে চারটি কক্ষে ১০০ শিক্ষার্থী থাকত। আগুন লাগার পর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হন।

মাদ্রাসা ও এতিমখানার পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে ছাত্রদের বইপত্র, কাপড়চোপড়, বেডিং, ট্রাংক, চৌকি, নগদ টাকাসহ সব মিলে ১০ লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম বলেন, সরকারিভাবে যে বরাদ্দ, তা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য। প্রতিষ্ঠানের জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকায় ইউনিয়ন পরিষদকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

খামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এতিমখানার সভাপতি মো. সাজেদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীরা বেশির ভাগই চরম গরিব। যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সরাকারিভাবে যদি কোনো সাহায্য না পাওয়া যায়, শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই মুহূর্তে কোনো কিছু কেনা সম্ভব নয়। ছাত্রদের কাপড়চোপড় ও থাকার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবার সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেন তিনি।

এ ঘটনায় খানসামা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সহীদুজ্জামান সাহ ৪০ হাজার টাকা অনুদান ও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি করে কোরআন শরিফ দেওয়ার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ১০টি কম্বল এবং ইউএনও আহমেদ মাহবুব ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য ২০০ কম্বল সহায়তা দিয়েছেন।