বাঙালিত্বের বিবর্তন ও ভবিষ্যৎ

গোলাম মুরশিদ
গোলাম মুরশিদ

একটা সময় ছিল যখন, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে, ‘বাঙালি’ বললে বোঝাত শুধু বাংলাভাষী হিন্দুদের। (‘ভদ্রলোক’ বললেও বোঝাত কমবেশি তাদেরই।) ‘বাঙালি’ ও ‘মুসলমান’ শব্দ দুটির অর্থ ছিল হিন্দু আর মুসলমান। এই পরিচিতি সম্পর্কে মুসলমানদেরও বিশেষ কোনো আপত্তি ছিল না। কারণ, শিক্ষিত মুসলমানরা তখন অনেকেই মনে করত যে তাদের স্বদেশ-ভূমি সুদূর মধ্যপ্রাচ্য অথবা উত্তর ভারত এবং তাদের মাতৃভাষা ফারসি অথবা নিদেনপক্ষে উর্দু। বাংলাকে যারা মাতৃভাষা বলে বিবেচনা করত, তারা বলত এবং মক্তবে শিখত ‘মুসলমানি বাংলা’। কিন্তু বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের বাংলাভাষী মুসলমানরা ধীরে ধীরে নিজেদের শনাক্ত করে বাঙালি বলে। বদরুদ্দীন উমরের ভাষায়, তারা আরব-ইরানের যে স্বপ্নে বিভোর থাকত, সেখান থেকে স্বদেশে ফিরে আসে। কারণ, পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন ও শোষণের মুখে নিজেদের আঞ্চলিক ও ভাষাগত পরিচয়কেই বড় করে তোলা ছাড়া তাদের কোনো উপায় ছিল না।
বস্তুত, পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পূর্ব পাকিস্তানে যে রাজনৈতিক আন্দোলন দানা বেঁধেছিল, সেই আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্রে ছিল তাদের এই ‘বাঙালি’ পরিচয়। এই ‘বাঙালি’ পরিচয় যেমন তখনকার রাজনৈতিক আন্দোলনকে শক্তি ও উৎসাহ জুগিয়েছিল, তেমনি সেই রাজনৈতিক আন্দোলনও ‘বাঙালি’ পরিচয়কে মুসলমানদের কাছে আন্তরিক করে তুলেছিল। পরিণতিতে ‘আমরা সবাই বাঙালি’—এই দৃঢ় বিশ্বাস নিয়েই হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান—সবাই মিলে একাত্তরের যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এর ফলে বারো-তেরো শ বছর ধরে যে বঙ্গভূমি ছিল পরাধীন, একাত্তরের সংগ্রামের মাধ্যমে, সেই পরাধীন ভূখণ্ড একটি স্বতন্ত্র ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদা লাভ করল। আমরা প্রথমবারের মতো একটা স্বাধীন দেশের পতাকা ওড়ালাম।

কিন্তু স্বাধীনতা লাভের আগেকার এবং তার পরবর্তী কালের ‘বাঙালি’ শব্দের অভিধা এক নয়। স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত পূর্ব বাংলায় যে অসাম্প্রদায়িক বাঙালি চেতনা দানা বাঁধছিল, স্বাধীনতা লাভের পর সেই অসাম্প্রদায়িক বাঙালি চেতনায় ফাটল ধরে। যে দেশের জনসংখ্যার শতকরা আশি ভাগের বেশি মুসলমান এবং যে মুসলমানরা ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে যোগ দিয়েছিল পাকিস্তানে, তারা মনেপ্রাণে অসাম্প্রদায়িক হয়নি কখনোই। অত অল্প সময়ের মধ্যে হতে পারেনি। বরং পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন ও শোষণের বৈরী পরিবেশের মোকাবিলা করতে গিয়ে তারা নিজেদের আঞ্চলিক ও ভাষিক পরিচয়কে জোরালো করেছিল। স্বাধীনতা লাভের পরে তাদের সেই স্বল্পকালের জন্য ধার করা পালকটি খসে পড়তে খুব দেরি হলো না।

বিচিত্র ধর্মীয় সংস্কৃতির স্রোতে পুষ্ট হয়েছে বাঙালিত্ব। ছেঁউড়িয়ায় বাউলদের মিলনমেলা। ছবি: প্রথম আলো
বিচিত্র ধর্মীয় সংস্কৃতির স্রোতে পুষ্ট হয়েছে বাঙালিত্ব। ছেঁউড়িয়ায় বাউলদের মিলনমেলা। ছবি: প্রথম আলো

এই দ্রুত রূপান্তরের পেছনে জোরালো কারণও ছিল। মুক্তিযুদ্ধের ঠিক পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে দেখা দিয়েছিল তীব্র অর্থনৈতিক সংকট এবং ভারতভীতি তথা হিন্দুবিদ্বেষ। এর ফলস্বরূপ অল্প কালের মধ্যেই তাদের চেতনার ওপর অসাম্প্রদায়িকতার যে হালকা প্রলেপটুকু পড়েছিল, তা মুছে যেতে সময় লাগল না। বরং অসাম্প্রদায়িক বাঙালি পরিচয়ের জায়গায় জোরেশোরে ফিরে এল জাতি হিসেবে তাদের ধর্মীয় পরিচয়। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং পেট্রো-ডলারের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে ধর্মীয় জাতীয়তাবাদের যে উন্মাদনা দেখা দিয়েছিল, তা এতে একটা বড় ভূমিকা পালন করেছিল। তবে ষোলোকলা পূর্ণ হলো ১৯৭৫-এর রাজনৈতিক পালাবদলের মাধ্যমে। টিকে থাকার জন্য পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকার যেসব রাজনৈতিক কৌশল ব্যবহার করেছিল, নিজেদের মুসলিম পরিচয় ছিল তার মধ্যে সবচেয়ে প্রধান। ক্ষমতাসীন নেতারা ব্যক্তিজীবনে ধর্মভীরু হন অথবা না-ই হন, তাঁরা ধর্মীয় লেবাস পরলেন এবং অন্যদেরও তা পরতে উৎসাহ দিলেন।

কিন্তু যা কৌতূহলোদ্দীপক, তা হলো: বাংলাদেশে নতুন করে যে মুসলিম পরিচয় দেখা দিল, তা খাঁটি হলেও, মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত তারা যে ভাষাভিত্তিক ‘বাঙালি’ পরিচয় অর্জন করেছিল, সেই পরিচয়কেও তারা বিসর্জন দিতে পারল না। বরং বাঙালিত্বের নতুন সংজ্ঞা দিয়ে তাকে আঁকড়ে রাখল। কেবল তা-ই নয়, নিজেদের সেই নব্য-বাঙালিত্বের বলয় থেকে অমুসলমানদের বহিষ্কার করার একটা প্রবণতাও তাদের মধ্যে লক্ষ করা গেল। এবং এই নতুন সংজ্ঞায়িত ‘বাঙালিত্ব’ অচিরেই তাদের কাছে ‘বাংলাভাষী মুসলমানত্বে’ পরিণত হলো। এভাবে কয়েক বছরের মধ্যে বাঙালিত্বের অভিধা এক প্রান্ত থেকে একেবারে উল্টো প্রান্তে পৌঁছে গেল। কয়েক দশক আগেও যা ছিল ‘হিন্দু বাঙালিত্ব’, তা-ই ‘মুসলমান বাঙালিত্বে’ পরিণত হলো। তবে ‘বাঙালি’ শব্দটা দিয়ে যেহেতু অমুসলমানদেরও বোঝায়, সে জন্য ‘বাঙালি’ শব্দটাকে তাদের কাছে সন্তোষজনক মনে হলো না। তাই ব্যবহৃত হলো নতুন একটি পরিভাষা—‘বাংলাদেশি’। এই শব্দ ব্যবহৃত হওয়ার কয়েক বছর আগে আবুল মনসুর আহমদ ‘পাক-বাংলার কালচার’ কথাটি দিয়ে ‘কেবল মুসলমানি বাঙালিত্বে’র ধারণাই প্রকাশ করেছিলেন।

এ পর্যন্ত বাঙালিত্বের রূপান্তর সম্পর্কে যা বললাম, অসাম্প্রদায়িক বাঙালিত্বে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের কাছে তাকে ভাষাভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা যা অর্জন করেছিলাম, তাকে বিসর্জন দেওয়ার অবাঞ্ছিত ঘটনা বলে মনে হতে পারে। মনে হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ বাঙালিত্বের সঙ্গে ধর্মকেও জুড়ে দিয়েছিল। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আমাদের ভাষিক পরিচয়কে লুপ্ত করেছিল। বরং রূপান্তরের মাধ্যমে হলেও বাঙালিত্বের অস্তিত্ব রক্ষায় এবং তার সমৃদ্ধিতে স্থায়ী ও ইতিবাচক অবদান রেখেছিল।

অন্যপক্ষে, স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম না হলে ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গে বাঙালিত্ব ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকত। তারপর হিন্দি ও ইংরেজির ক্রমবর্ধমান চাপে এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বাঙালি পরিচয় ধীরে ধীরে শুকিয়ে গিয়ে ভারতীয়ত্বে পরিণত হতো। সেখানকার নাগরিকেরা নিজেদের বাঙালি বলে শনাক্ত না করে ক্রমেই নিজেদের পরিচয় দিত ভারতীয় অথবা ইন্ডিয়ান বলে। বস্তুত, এরই মধ্যে তা করতে শুরুও করেছে।

বাঙালিত্বের ঐক্যের শক্তিতে বলীয়ান হয়েই হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান—সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ১৯৭১-এ। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে প্রকাশিত এই পোস্টারেও রয়েছে সেই কথা।  ছবি সংগৃহীত
বাঙালিত্বের ঐক্যের শক্তিতে বলীয়ান হয়েই হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান—সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ১৯৭১-এ। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে প্রকাশিত এই পোস্টারেও রয়েছে সেই কথা। ছবি সংগৃহীত

বাঙালিত্বের প্রাণভোমরা যে বাঙালি সংস্কৃতি, পশ্চিমবঙ্গে তা-ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিষ্প্রাণ হয়ে যেত। ইতিমধ্যে তাতে যে হিন্দি এবং সর্বভারতীয় প্রভাব পড়তে আরম্ভ করেছে, তা-ও বাড়তে থাকত। বস্তুত, ১৯৪৭ সালে বঙ্গদেশ যে স্থায়ীভাবে দ্বিখণ্ডিত হয়, তা ছিল বাঙালিত্বের মৃত্যুর ঘণ্টাধ্বনি। এর ফলে বঙ্গদেশ কেবল দুই ভাগে বিভক্ত হয়নি, পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষী হিন্দু-মুসলমান—উভয়েই রীতিমতো পরাধীন হয়েছিল। কারণ, ভারতের উপনিবেশে পরিণত না হলেও, পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি দুর্বল অঙ্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। অন্যপক্ষে, পূর্ব বাংলা স্বাধীন ভূখণ্ড নয়, পরিণত হয়েছিল রীতিমতো পাকিস্তানের উপনিবেশে। সেখানে শুধু বাঙালিত্ব নয়, বাংলা ভাষাও বিপন্ন হয়েছিল। এই পরিবেশে ১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সদ্যোজাত বাঙালিত্ব এবং তার সর্বপ্রধান অঙ্গ বাংলা ভাষার দেহে নতুন প্রাণসঞ্চার করে। ফলে বাংলা ভাষা-সংস্কৃতির মরা গাঙে কেবল যে জোয়ার এল, তা-ই নয়, বরং পূর্ব বাংলায় একটি ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ জন্ম নিল—যা থেকে জন্ম নিল আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ। এবং সেই দেশে বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংগীত ও সংস্কৃতির চিরজীবী হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিল। বস্তুত, তাদের ক্রমবিকাশের সিংহদুয়ার খুলে গেল।

অন্যপক্ষে, পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অধীন। সেখানে ভাষা-সংস্কৃতির ওপর যেমন কোনো সরকারি হামলা আসেনি, তেমনি কোনো পৃষ্ঠপোষকতার বন্যাও দেখা দেয়নি। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিরোধিতা অথবা হামলা হলে সেখানে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির পক্ষে যে প্রতিবাদী আন্দোলন দানা বাঁধতে পারত, এবং সেই আন্দোলনের মাধ্যমে ভাষা ও সংস্কৃতি যে নতুন প্রাণশক্তি লাভ করতে পারত, তা-ও হয়নি। ফলে সেখানে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি স্বাভাবিক প্রৌঢ়ত্বের দিকে এগিয়ে গেছে। এরপর বার্ধক্য দেখা দেবে এবং পরিণতিতে সে ধারা সেখানে একেবারে শুকিয়ে যাবে বলে মনে হয়।

বাংলাদেশের ছবিটা এর একেবারে উল্টো। প্রথমত, বাংলা যেহেতু বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা, সে জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে বাংলা ভাষায় নিত্যনতুন পরিভাষা এবং দেশি-বিদেশি শব্দ আমদানি করতে হবে। নতুন নতুন শব্দ এবং অনুবাক্যও গঠিত হবে। এসব শব্দ ছাড়া বহু আঞ্চলিক আর ধর্মীয় শব্দও এখানকার প্রমাণ্য বাংলায় ঢুকে পড়বে। তারপর এই শব্দাবলি রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহৃত হবে। সংবাদমাধ্যমে ব্যবহৃত হবে। পাঠ্যপুস্তকে ব্যবহৃত হবে। সাহিত্য ও সংগীতেও ব্যবহৃত হবে। অতঃপর তাদের প্রয়োগ লক্ষ করা যাবে প্রাত্যহিক জীবনের ভাষায়। আজ হোক, কাল হোক, সব উচ্চশিক্ষার মাধ্যমও বাংলা হতে বাধ্য। এভাবে স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলা ভাষা শুধু যে বেঁচে থাকবে, তা-ই নয়, ক্রমেই তা বিকাশ লাভ করবে। বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ বস্তুত বাংলাদেশে।

বাঙালি সংস্কৃতির রূপান্তরও ঘটবে, কিন্তু সে সংস্কৃতির ধর্মীয় বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি পয়লা ফাল্গুন, একুশে ফেব্রুয়ারি ও পয়লা বৈশাখের মতো নতুন নতুন ধর্মনিরপেক্ষ উৎসবও পালিত হবে। সত্যি সত্যি, ভবিষ্যতের বাংলা সংস্কৃতিও বিকাশ লাভ করবে বাংলাদেশে। তবে সেই সংস্কৃতিতে সাধারণভাবে মুসলমানি বৈশিষ্ট্য বৃদ্ধি পাবে। যারা অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী, তাদের কাছে এ কথা হতাশাজনক মনে হতে পারে, কিন্তু এই মুসলমান-প্রধান দেশে তা হওয়াই স্বাভাবিক। বিশেষ করে সাম্প্রতিক কালে আন্তর্জাতিক বিশ্ব ধর্মীয় উন্মাদনা ও ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ যে রকম প্রবল হয়ে উঠেছে, তাতে অন্য কিছুর প্রত্যাশা করা অবাস্তব মনে হয়। কিন্তু রূপান্তর যেমনই হোক, ভবিষ্যতে বাঙালি (অথবা বাংলাদেশি) বলে গর্বিত পরিচয় দেওয়ার মতো লোক বাংলাদেশেই থাকবে।

আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির পরিচয়ও বিস্তার লাভ করবে বাংলাদেশের মাধ্যমে, পশ্চিমবঙ্গের মাধ্যমে নয়। যদিও স্বীকার করতে হবে যে এখন থেকে এক শ বছর আগে রবীন্দ্রনাথ উৎকৃষ্ট সাহিত্য সৃষ্টি করে বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মানচিত্রে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তারপর আন্তর্জাতিক বিশ্ব যখন বাংলা ভাষার সেই গৌরবোজ্জ্বল পরিচয়কে প্রায় ভুলে যাচ্ছিল, তেমন পরিবেশে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নতুন করে বাংলা ভাষার পতাকা উড়ল মুক্তিযুদ্ধের সময়ে। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত কণ্ঠে বিশ্বসভার সদস্যরা প্রথমবারের মতো একটি ভাষণ শুনলেন বাংলা ভাষায়। সেই ঐতিহ্য এখনো বহাল আছে। তাঁর ৭ মার্চের বাংলা ভাষণও সম্প্রতি স্বীকৃতি পেল বিশ্ববাসীর অমর ঐতিহ্য বলে। তবে বাঙালিয়ানার এই বিজয়যাত্রার সূচনা হলো বাংলা ভাষা স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা হওয়ার জন্য।

গোলাম মুরশিদ: গবেষক।