গানের দলের নৌকাডুবি, শিল্পীর মরদেহ উদ্ধার, স্কুলছাত্র নিখোঁজ

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় ঝড়ে নৌকাডুবির ঘটনায় গানের দলের এক শিল্পীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে ১২ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্র। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার চামটা বন্দরের কাছে নাগচিন্নী নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

শংকর চন্দ্র নামে এক গানের শিল্পীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে শংকরের সহযোগী তুহিন মিয়া নামে এক স্কুলছাত্র।

মারা যাওয়া শংকর চন্দ্র (৫০) কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দানাপাটুলী ইউনিয়নের গাগলাইল এলাকার মৃত শিবচরণ দাসের ছেলে। আর নিখোঁজ তুহিন মিয়া সদর উপজেলার বৌলাই ইউনিয়নের উত্তর রাজকুন্তি গ্রামের মো. কোহিনুর মিয়ার ছেলে। তুহিন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিল।

শংকরের ছোট ভাই শেখর চন্দ্র দাস, নিখোঁজ তুহিনের বাবা কোহিনুর মিয়া ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যায় শংকর ও তুহিনসহ ১০-১২ জনের একটি গানের দল জেলার ইটনা উপজেলার পাঁচকাহনিয়া এলাকায় একটি গানের আসরে গিয়েছিল। সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে চামটা বন্দর ঘাটের কাছাকাছি হাফিজ উদ্দিনের ইটভাটার সামনে এলে হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় অন্যরা সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও শংকর ও তুহিন নিখোঁজ থাকে। আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এলাকাবাসী জাল ফেলে শংকরের মরদেহ উদ্ধার করে।

ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা এলাকাবাসীকে নিয়ে তুহিনকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. দুলাল মিয়া। এ ঘটনায় বৌলাই এলাকার আনোয়ার মিয়া নামে আরেকজনকে আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

করিমগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাসুদ আনোয়ার বলেন, শংকরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর নিখোঁজ তুহিনকে উদ্ধারের জন্য চেষ্টা চলছে।

হঠাৎ কালবৈশাখী ও বৃষ্টিতে জেলার অনেক ইটভাটায় তৈরি কাঁচা ইট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ঘরবাড়ি তছনছ হয়েছে। অনেক এলাকার গাছ উপড়ে পড়েছে।
কিশোরগঞ্জ সদরের কর্শাকড়িয়াল এলাকার এসটিডি ইটভাটার মালিক মো. আবদুল ওয়াহাব বলেন, সোমবার রাতের হঠাৎ বৃষ্টিতে তাঁর ইটভাটায় সাজিয়ে রাখা প্রায় দেড় লাখ কাঁচা ইট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ছাড়া সদরের যশোদল এলাকার হাজি চান মিয়ার মালিকানাধীন সিএমবি ইটভাটাসহ আরও কয়েকটি ইটভাটায় তৈরি কাঁচা ইট বৃষ্টিতে ভিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। ঝড়ে সদর ও করিমগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি এলাকায় গাছসহ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে এ বৃষ্টি ফলনের জন্য উপকারী বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, হঠাৎ এ সময়ের বৃষ্টি কৃষকের জন্য আশীর্বাদ। কৃষির জন্য এ বৃষ্টি খুবই দরকার ছিল। এ বৃষ্টির কারণে বোরো ধান ও রবিশস্যের অনেক উপকার হয়েছে।