'ভালোবাসা দিয়ে অপরাধীর বিবেক জাগাতে হবে'

বিতর্ক, রচনা, পোস্টার ও কার্টুন আঁকা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ছবি: দুদকের সৌজন্যে
বিতর্ক, রচনা, পোস্টার ও কার্টুন আঁকা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ছবি: দুদকের সৌজন্যে

দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দেওয়ার পাশাপাশি অপরাধীর বিবেক ভালোবাসা দিয়ে জাগিয়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। আজ মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন এই শিক্ষাবিদ।

দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহের দ্বিতীয় দিন শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত বিতর্ক, রচনা, পোস্টার ও কার্টুন আঁকা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কৃত করতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দুদক।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, দুদকের দুই ধরনের দায়িত্ব। একটি অপরাধীকে শাস্তি দিয়ে দমন করা, অন্যটি অপরাধীর বিবেককে ভালোবাসা দিয়ে জাগিয়ে তোলা। তিনি আরও বলেন, দমন করে কতটুকু সফল হওয়া যাচ্ছে, তা আমরা দেখছি। মানুষের হৃদয়কে জাগিয়ে তুলতে হবে। ভালোবাসা দিয়ে অপরাধের বিরুদ্ধে একধরনের শক্তি গড়ে তুলতে হবে। যার মাধ্যমে দুর্নীতি দূর হবে। দুটিকে পাশাপাশি বাস্তবায়ন করতে না পারলে শুধু এক পথে দুর্নীতি দূর হবে না।

এই শিক্ষাবিদ বলেন, একটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব ন্যায়বান মানুষ তৈরি করা। ন্যায়সংগত শাসনব্যবস্থা তৈরি করা—যে শাসনব্যবস্থা থাকলে মানুষ এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। শাসনব্যবস্থায় যদি কোনো জায়গায় দুর্বলতা থাকে, কোনো ছিদ্র থাকে, তাহলে মানুষ চাইলেও ভালো হতে পারে না।

দুদকের অনুষ্ঠানে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। ছবি: দুদকের সৌজন্যে
দুদকের অনুষ্ঠানে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। ছবি: দুদকের সৌজন্যে

নতুন প্রজন্মকে সতর্ক করে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমাদের প্রজন্ম গর্ব করে বলতে পারে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। আগামী প্রজন্মের দায়িত্ব হবে দেশকে সমৃদ্ধ করা। এ ক্ষেত্রে তারা যদি ভুল করে, তাহলে এর খেসারত তাদেরই দিতে হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, শুধু দুদক দিয়ে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়। সর্বগ্রাসী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, দুর্নীতির ডালপালা অনেক। দুর্নীতি মানুষের মনুষ্যত্বকে নষ্ট করে, রাজনীতিসহ সমাজ, পরিবেশ—সবকিছুকে কলুষিত করে দেয়।

চলতি বছর দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে করা মামলায় ৭০ শতাংশ সাজা হয়েছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা শতভাগ শাস্তি নিশ্চিত করতে চাই। আমরা এখন শুধু পত্রিকায় খবর ও মানুষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নয়, আমরা নিজের গোয়েন্দা তৎপরতা দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ সব খাতে যারা দুর্নীতিবাজ হিসেবে খ্যাত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব—এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।’

‘বন্ধ হলে দুর্নীতি, উন্নয়নে আসবে গতি’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে দুর্নীতি প্রতিরোধ সপ্তাহ-২০১৮।