যেকোনো দিন চার আসামির রায়

মৌলভীবাজারের রাজানগর উপজেলার সাবেক মাদ্রাসাশিক্ষক আকমল আলী তালুকদারসহ চারজনের বিরুদ্ধে ৭১–এর মানবতাবিরোধী মামলার রায় দেওয়া হবে যেকোনো দিন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, গুম, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে। বাকি তিন আসামি মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার আবদুন নূর তালুকদার ওরফে লাল মিয়া, আনিছ মিয়া ও আবদুল মোছাব্বির মিয়া পলাতক।

প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল মামলাটি রায়ের জন্য আজ মঙ্গলবার অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন। ট্রাইব্যুনালে এটি হবে ৩৩তম রায়। যুক্তিতর্ক শুনানির সময় আসামিদের মধ্যে আকমল আলী তালুকদার (৭৩) উপস্থিত ছিলেন।

প্রসিকিউশনের পক্ষে এ মামলায় যুক্তি উপস্থাপন করেন সৈয়দ হায়দার আলী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন শেখ মুশফিক কবীর ও সায়েদুল হক সুমন। আসামি আকমলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুস সোবহান তরফদার। পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আবুল হাসান যুক্তি উপস্থাপন করেন। গত বছরের ৭ মে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ৫৯ জনকে হত্যা, ছয়জনকে ধর্ষণ, ৮১টি বাড়িতে লুটপাট অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। সাক্ষ্য–প্রমাণ ও পর্যাপ্ত নথির মাধ্যমে প্রসিকিউশন দুটি অভিযোগই প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে দাবি করা হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয়েছে। এ মামলায় প্রসিকিউশনের ১৩ সাক্ষীর মধ্যে পাঁচজনই একাত্তরে আসামিদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। ওই দিনই রাজনগরের পাঁচগাঁও গ্রাম থেকে আকমল আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মৌলভীবাজার টাউন সিনিয়র কামিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত এই উপাধ্যক্ষকে পরে ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ চার আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর গত বছরের ৭ মে অভিযোগ গঠন হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় ৪ জুলাই।