এবার তুলে নেওয়া হলো দোকান কর্মচারীকে

রাজশাহীর চারঘাট থেকে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে র‌্যাব পরিচয়ে মুদি দোকানের কর্মচারীকে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁর ভাই আজ বুধবার চারঘাট থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এর আগে গত শনিবার সকালে কালো মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া শিক্ষকের এখনো খোঁজ মেলেনি। ঘটনার পরের দিন রোববার তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। নিখোঁজ শিক্ষক ও মুদি দোকানের কর্মচারীর বাড়ি একই গ্রামে।

তুলে নিয়ে যাওয়া মুদি দোকানের কর্মচারীর নাম আসাদুজ্জামান (২২)। তাঁর বাবার নাম ইয়াসিন আলী। তাঁর বাড়ি চারঘাট উপজেলার আস্করপুর সরকারপাড়া গ্রামে। আসাদুজ্জামান উপজেলার সরদহ বাজারে নজরুল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি মুদি দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। আর কলেজশিক্ষকের নাম শফিকুর রহমান। তাঁর বাড়ি আস্করপুর পশ্চিমপাড়ায়।

দোকানের মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত এবং দুপুরের বিরতির পর বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত তাঁর দোকান খোলা থেকে। দোকান খোলা থাকার পুরোটা সময় আসাদুজ্জামান দোকানেই থাকে। গত মঙ্গলবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার সময় র‌্যাব পরিচয়ে আসাদুজ্জামানকে তিন-চারজন লোক এসে তুলে নিয়ে যায়। তারা মোটরসাইকেল নিয়ে এসেছিল। আসাদকে জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়েছে।

এ বিষয়ে র‌্যাব-৫-এর উপ-অধিনায়ক আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তাঁরা জানেন না। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ওই (চারঘাট) এলাকায় তাঁরা কোনো অভিযানই চালাননি।

চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, দুপুরের দিকে আসাদুজ্জামানের ভাই মইনুল ইসলাম থানায় একটি খসড়া অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাতে র‌্যাব পরিচয়ে তাঁর ভাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরে আরও খোঁজখবর নিয়ে তাঁরা চূড়ান্ত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনা উপপরিদর্শক (এসআই) শরীফুল ইসলামকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে চারঘাট উপজেলার অনুপমপুর এলাকা থেকে ডাকরা ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শফিকুর রহমান ওরফে উজ্জ্বল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক বজরুল ইসলামকেও তুলে নেওয়া হয়। ওই দিন দুপুরেই বজরুলকে পাবনার দাশুড়িয়া এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। তিনি নিরাপদে বাড়িতে ফিরে আসেন। তবে তিনি বলতে পারেননি যে কারা তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু তাঁর সহকর্মীর এখনো কোনো হদিস মিলছে না।

বুধবার দুপুরে চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত শিক্ষক শফিকুর রহমানের কোনো খোঁজ তাঁরা জানতে পারেননি। গত রোববার সকালে শিক্ষক শফিকুর রহমানের শ্বশুর নজরুল ইসলাম চারঘাট থানায় একটি জিডি করেছেন।